বরিশাল

বরিশালের বানারীপাড়ায় মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আলী হোসেন জলদস্যুদের হাতে জিম্মি

শফিক শাহীন বানারীপাড়া প্রতিনিধিঃ
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারাকান্দি ইউনিয়নের উমারের পাড় গ্রামের সন্তান আলী হোসেন (২৬) ।

মঙ্গলবার মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পরে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজটি। জিম্মি করা হয় জাহাজে থাকা ২৩ নাবিককে যাদের মধ্যে রয়েছেন বানারীপাড়ার মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আলী হোসেন। তিনি উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারেরপাড় গ্রামের এমাম হোসেনের ছোট ছেলে।

মঙ্গলবার দুপুরে জলদস্যুরা তাদের জিম্মি করার পরে বিকাল ৩টার দিকে মুঠোফোনে স্ত্রীকে কল দিয়ে আলী হোসেন জানিয়েছেন, সোমালিয়ান জলদস্যুরা তাদের জাহাজ অ্যাটাক করে সবাইকে জিম্মি করেছে। মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় হয়তো মুক্তি পাওয়ার আগে আর যোগাযোগ হবে না! তাদের জন্য যেন বাবা-মা সহ পরিবারের সবাই দোয়া করেন। এরপর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ কথা শোনার পর থেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন নাবিক মোঃ আলী হোসেনের উৎকন্ঠিত পরিবার।

ক্রন্দনরত সদ্য বিবাবিত স্ত্রী ইয়ামনি বলছেন, আগামী কুরবানীর ঈদে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল আলীর! পরিকল্পনা ছিল দুইজন মিলে ঈদের ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাবেন তারা!! নাড়ী ছেড়া ধন সন্তান জিম্মি হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই শয্যাশায়ী হয়ে দু’চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝড়াচ্ছেন আলী হোসেনের গর্ভধারিণী মা নাসিমা বেগম। ছেলেকে ফিরে পেতে পড়ছেন দোয়া-দরুদ। তার ছেলেসহ জিম্মি সবাইকে স্বজনের কাছে ফিরিয়ে দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়র জন্য সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন তিনি। জিম্মি নাবিক আলী হোসেনের বাবা স্থানীয় ইউবিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক দপ্তরি এমাম হোসেন জানান, সামনের কুরবানীর ঈদে আলী হোসেনের বড় ভাই জুলফিকারের সাথে বাড়িতে এসে একত্রে কুরবানী দেওয়ার কথা ছিল তার।

এদিকে স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের জুলাই মাসে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় বিবাহ করেছেন আলী হোসেন। ছোটবেলা থেকেই অদম্য মেধাবী আলী হোসেন বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে ২০১৪ সালে মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন । এর পরে ভর্তি হন নারায়নগঞ্জের মেরিন একাডেমীতে, সেখানে ৪ বছর পরালেখা শেষ করে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরীতে জয়েন করেন ২০২০ সালে। সবশেষ গত আড়াই মাস আগে তিনি চাকরীতে জয়েনের উদ্দেশ্যে কেএসআর এম শিপিং লিঃ এর নিজস্ব খরচে সাউথ কোরিয়াতে গিয়ে এম ভি আবদুল্লাহ নামের ওই জাহাজে নাবিক ( ওয়েলার) হিসেবে কাজ শুরু করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

Back to top button