লক্ষীপুর প্রতিনিধিঃ
লক্ষীপুরের রায়পুর উপজেলায় ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে গরুর ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন ও তার ভাই আলাউদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে সালাউদ্দিনের স্ত্রী সুমি বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন৷ এতে উপজেলার উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ও বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান ফারুকুজমান সর্দারসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এদিকে চাঁদার জন্য আসামিরা জোরপূর্বক সালাউদ্দিনের স্ত্রী, মা ও ভাইয়ের কাছ থেকে ৪টি অলিখিত স্ট্যাম্পে সই নিয়েছেন। স্ট্যাম্পগুলো উদ্ধারের জন্য একইদিন আলাউদ্দিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোহরাব সর্দার ও ফারুক সর্দারের নামে লিখিত অভিযোগ করেন।
বাদীর আইনজীবী ইউছুফ আজম সিদ্দিকী বলেন, ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন ও আলাউদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় মামলাটি আদালতের আমলে নিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রায়পুর) আদালতের বিচারক বেলায়েত হোসেন রায়পুর থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ছাড়া অলিখিত স্ট্যাম্পগুলো উদ্ধারের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন উপজেলার চর আবাবিল গ্রামের সাইজুউদ্দিন সর্দার, জলিল ঢালী, রব মল্লিক ও উম্মত আলী। উল্লেখিত লক্ষ্মীপুর ডিবি অফিসে এদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে মুক্তিপণ আদায় ও কিশোর গ্যাঙের মামলা রয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানায়, ভুক্তভোগী সালাউদ্দিন উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের গাজীকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় গরু ব্যবসায়ী। স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে তার মাংসের দোকান রয়েছে।
গত ৩০ জুন রাতে বাড়িতে যাওয়ার পথে ফারুকের নির্দেশে আসামিরা সালাউদ্দিনকে ঘিরে ফেলে। এ সময় ব্যবসা করতে হলে তাকে ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবি জানায় তারা। এতে রাজি না হওয়ায় ৩ জুলাই রাতে ওই আসামিরা তার বাড়িতে হামলা চালায়। ভয়ে একদিন সময় চেয়ে তিনি ঢাকায় আত্মগোপনে যান। ২৭ আগস্ট সালাউদ্দিনের ভাই আলাউদ্দিন প্রয়োজনে হায়দরগঞ্জ বাজারে যায়।
সেখানে আসামিরা তাকে আটক করে ফারুকের টর্চার সেলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থল যান বাদী সুমি ও তার শ্বাশুড়ি আনোয়ারা বেগম। তাদের সামনেই আসামিরা আলাউদ্দিনকে মারধর করে। এক পর্যায়ে ৪ টি অলিখিত স্ট্যাম্পে সুমি, আলাউদ্দিনের সই ও আনোয়ারার টিপসই নেওয়া হয়।
বাদী আরো জানায়, অন্যদিকে সালাহ উদ্দিনের কাছে টাকা চেয়ে ফারুক মোবাইলফোনে হুমকি দেয়।
এতে ৩১ আগস্ট ঢাকা থেকে তিনি বাড়িতে এসে রাতে হায়দরগঞ্জের বাংলাবাজারে যান। সেখানে আসামিরা তাকে আটক করে ফারুকের আড্ডাখানায় নিয়ে যায়৷ সেখানে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত, মারধর ও শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে তার পকেটে থাকা ২ লাখ ৬ হাজার টাকা ফারুক নিয়ে যায়। পরে পাশ্ববর্তী মেঘনানদীর পাড় এলাকায় নিয়েও তাকে মারধর করা হয়।
এবিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান ফারুকুজমান সর্দারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলাকায় খবর নিলেই জানতে পারবেন, বাদীর অভিযোগ সত্য নয়। আমি এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।
এব্যাপারে রায়পুর থানার পুলিশের কাছে জানতে চাইলে পরিদর্শক তদন্ত শামছুল আরেফিন বলেন, আদালতের নির্দেশনার কপি হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।