নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার আমেনা বেগম নামে এক গৃহবধূকে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্বামী, শশুর, শাশুরী ও দেবর মিলে অমানবিক নির্যাতন করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে দুটি মামলা করে ভুক্তভোগী আমেনা বেগম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, দাউদকান্দি উপজেলার
দাউদকান্দি চাউল বাজার গ্রামের আলম চাঁনের ছেলে মোঃ মমিনুল ইসলামের সাথে তিতাস উপজেলার মোহনপুর গ্রামের কান্দু মিয়ার মেয়ে আমেনা বেগমের সামাজিক ভাবে ২ লাখ টাকার দেন মোহরে ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় মেয়ের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে মোঃ আমেনা বেগমের বাবার বাড়ি হতে ফার্নিচার ও আসবাবপত্র গয়নাঘাটি দেওয়া হয়। যাহারর দাম আনুমানিক বর্তমান বাজারে ৫ লাখ টাকা হবে। বিবাহের কিছু দিন পর শশুর আলম চাঁন (৫৫), শাশুড়ী নুরজাহান বেগম (৫২), স্বামী মমিনুল ইসলাম (৪০), দেবর আরিফ মাহমুদ ( মাসুম) (২৩) এরা সকলে মিলে যৌতুক হিসেবে ৫ লাখ টাকা আনতে বলে আমেনা বেগমকে। আমেনা বেগম এর শশুর আলম চাঁন আমেনা বেগম কে বলে মা তুমি আমাকে ৫ লাখ টাকা এনে দাও৷ তোমার বাবার বাড়ি হতে আমি তোমার সে টাকায় জায়গা রেখে তোমার নামে দোকান করবোভবিষ্যতে তোমার সুবিধা হবে। অন্য দিকে স্বামী বলে যদি যৌতুকের ৫ লাখ টাকা না আনিস তোকে আমি তালাক দিব। আমেনা বেগম তখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাই আমেনা বেগম সন্তানের চিন্তা করে। শশুরের কথা মত স্বামীর সংসারে সুখের আশায় ৫ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয় শশুরকে। কিছুদিন পর মমিনুল ইসলামের ঔরসে আমেনা বেগমের ১টা কন্যা সন্তান জন্ম হয়। তারপর আমেনা বেগম এর শশুরের ফ্যামিলি আবার নতুন করে তৈরি করে নতুন ফাঁদ। এবার আমেনা বেগমকে তার শশুর এর ফ্যামিলি যৌতুক বাবদ ১০ লাখ টাকা এনে দিতে বলে। এবার আমেনা বেগম যৌতুক এর ১০ লাখ টাকা এনে দিতে না পারায়।আমেনা বেগমকে মারধর সহ ভাতে, কাপড়ে, তৈলে সাবানে, কষ্ট দিতে থাকে,এবং বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয় আমেনা বেগম। পরবর্তীতে আমেনা বেগম কে শশুর শাশুড়ী অত্যাচারে করে আমেনা বেগম এর বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে আমেনা বেগম কুমিল্লা আদালতের নারী শিশু মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নাম্বার ৫৮৩/২০২২ ইং, আমেনা বেগম মোঃ মমিনুল ইসলাম এর ঔরসে আরো একটি পুএ সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। আমেনা বেগম আরো একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নাম্বার ৫৭৬/২০২২ইং আমেনা বেগম এর ঐ আদালতের মামলা থেকে জানা যায়, আমেনা বেগম এর জেঠা শশুর নিঃসন্তানি ছিলেন তাকে দেখার মতো কেউ ছিল না, তাই আমেনা বেগম তার জেঠা শশুর কে দেখা শুনা ও খেদমতের দায়িত্ব নেন। আমেনা বেগমের জেঠা শশুর আমেনা বেগমের খেদমতে খুশি হয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে, আমেনা বেগমকে ২ শতক জায়গা লিখে দেন। পরবর্তীতে আমেনা বেগম তার জেঠা শশুরের দেওয়া দুই শতক জায়গায় তাহার বাবার বাড়ি থেকে এসে তাহার সন্তানদেরকে নিয়ে বসবাস করিতে থাকে। কিন্তু আমেনার শশুর শাশুড়ি দেবর স্বামী এরা কেউ আমেনার এই জেঠা শশুরের দেওয়া জায়গার ঘরের মধ্যে থাকা সহ্য করতে পারছে না। আমেনা বেগমকে আবার আমেনা বেগমের শশুরের ফ্যামিলি বিভিন্ন ভাবে চক্রান্ত করিতেছে হত্যা করার উদ্দেশ্যে এবং জেঠা শশুরের দেওয়া জায়গা থেকে তারাতে। তাই আমেনা বেগম এর নির্যাতনের খবর পেয়ে সাংবাদিকগণ সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনা উদঘাটন করে। জানা যায় যে, কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি মডেল থানাধীন জয়পুর মৌজাস্থল জেএল নং- ১৬৭ , বি এস১৭২, খতিয়ান নং – সি এস (২৯,৪৭,৩৬,৩৩,৯৫,৬৭নং খতিয়ানভুক্ত।সি এস ও এস এনো ৩৩ তেএিশ) দাগে নাল হালে ভিটি ৪৪ শতকের অন্দরে যাহার উত্তরে অশোক সাহা গং দক্ষিণের দাতা নিজে পূর্বে চলাচলের রাস্তা। পশ্চিমে নাজমুল সরকার গং। অত্র চৌহদ্দির মধ্যে উত্তর দক্ষিণ প্রস্থে ১৮ আঠারো ফুট ভিটি ০২ (দুই) শতক ইহার অন্দরে রাস্তার লাগ পূর্বাংশে ভিটি ১ এক শতক এবং পশ্চিমাংশে ভিট ১ শতক সম্পত্তি। আমেনা বেগম এর জেঠা শশুর আঃ কাদের, পিতা মৃত ছানি মাহমুদ, মাতা মৃত জাবেদা খাতুন সাং দাউদকান্দি বাজার, পোঃ দাউদকান্দি, থানা : দাউদকান্দি জেলা : কুমিল্লা, মারা যাওয়ার পূর্বে আমেনা বেগমকে, অছিয়ত নামা দলিল, নং ১৮ মুলে আমেনা বেগমকে ও তাহার মেয়ে মমিতাকে ১ শতক এবং তাহার ছেলে আল-আমীন কে এক শতক মোট ২ শতক, সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করিয়া দেন , আমেনা বেগম ঐ সম্প্রীতির মালিক হইয়া নিজ খরচে ৩ টা দোকান ও বসত ঘর নির্মাণ করে দখলে নিয়োজিত আছেন। এখন অসহায় আমেনা বেগম স্বামী হারা, ঘর হারা ২ সন্তানকে নিয়ে যাতে নিরাপদে শশুর, শাশুড়ী, স্বামী ও দেবরদের অত্যাচারে হাত থেকে রক্ষা পায়।তার জেঠা শশুর দেওয়া ২ শতক জায়গায় নিরাপদে বসবাস করতে পারে তাই আদালত মামলা করেন।