মোঃ আলাউদ্দীন মন্ডলঃ
অবশেষে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন শিক্ষকসহ সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম চপল। টানা দুই বছর বিচারকার্য পরিচালনার পর ২৩ আগষ্ট (বুধবার) তথ্য প্রমানের ব্যর্থ ও সাক্ষিদের জবানবন্দীর পর্যালোচনা করে এই মামলা থেকে সবাইকে খালাস প্রদান করেছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল -৩ এর বিচারক বেগম শারমিন আখতার।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৭ জুলাই সাংবাদিকের নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা আদায় করার অপরাধে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হয় বাগমারা উপজেলার মুগাইপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজ আল আসাদ @ হাফিজ মাষ্টারের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে ঐ শিক্ষকের নানা দুর্নীতি, অপকর্ম ও ১০ বছরের শিশুকে বিয়ে করাসহ অসংখ্য তথ্য তুলে ধরে ৪ এবং ৫ আগষ্ট দৈনিক গণমুক্তি পত্রিকাসহ কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেই সংবাদ প্রকাশে ঈর্ষান্বিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২১ সালের ৯ আগষ্ট সাত জনের নাম উল্লেখ করে বাগমারা থানায় ১৪৩,৩৮৫, ৪২৭/ ৫০৬ ধরা উল্লেখ করে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করেন হাফিজ মাষ্টার। সাত জনের মধ্যে ৬ ও ৭ নং আসামীর নাম দেওয়া দৈনিক গনমুক্তি পত্রিকার বাগমারা প্রতিনিধি সোহেল রানা ও সংবাদ প্রকাশকারি গণমুক্তি পত্রিকার রাজশাহী ব্যুরোচীফ মাজহারুল ইসলাম চপলের।
সেই মামলার বর্ণনায় বলা হয়েছে, মুগাইপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মান কাজ চলাকালিন অবস্থায় প্রধান শিক্ষকের নিকট হতে চাঁদা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু ঐ মামলায় চাঁদা চাওয়ার কোন তথ্য প্রমান বা সুত্র না পেলেও মোটা উৎকোচের বিনিময়ে মামলা এজাহার ভুক্ত করেন থানার ততকালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহমেদ। এরপর ৯ আগষ্ট সন্ধ্যায় মামলার এজহারকৃত ১, ৩, ৪ নং আসামীকে গ্রেফতার করেন বাগমারা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনে মুক্তি পান। এরপর মামলার নিয়ম অনুয়ায়ী টানা দুই বছর বিচারকার্য পরিচালনার পর এই মামলা থেকে অব্যহতি প্রদান পুর্বক মামলাটি খারিজ করেছে আদালত।
মামলাটি সমাপ্তির পর আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড: মোঃ মুঞ্জুর রহমান বিশ্বাস সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে যে, মামলা দায়ের হয়েছিল তা বিজ্ঞ আদালতের কাছে সন্দেহেতিত প্রমানিত না হওয়ায় আসামীদেরকে অত্র মামলা হতে খালাস প্রদান করেছেন। এই মামলার যারা সাক্ষি ছিলেন, তারা বলছে এই ধরনের কোন ঘটনা তারা দেখেনি। আমার মক্কেল একজন সাংবাদিক। সে সত্য সংবাদ প্রকাশ করায়, ক্ষুব্ধ হয়ে আমার মক্কেলকে হয়রানি করার লক্ষে এই মিথ্যা মামলা করেছিল।
পরে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী (পাবলিক প্রসিকিউটর) আফতাব উদ্দিন বলেন, বাদী চাইলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে মামলার ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম চপল বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিলনা। এটাই প্রথম মামলা, তাও মিথ্যা মামলা। এই মামলায় আমাকে সাংবাদিক সমাজ, আত্মীয় স্বজনসহ সমাজের কাছে সম্মানহানি ও হেউপ্রতিপন্ন করেছে। আমাকে সংবাদ মাধ্যমে কাজ করতে বাধাগ্রস্ত করেছে। হাফিজ মাষ্টার তার নিজের দুর্নীতি ও অপকর্ম ঢাকতে এই অপকৌশল ব্যবহার করেছে। আমি তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।