মোঃ নাজমুল হাসান বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার ধুনটে বহুল আলোচিত ধর্ষণ ও সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সবুজ আলীর বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ তদন্ত করেছে পিবিআই।আজ বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরের দিকে বগুড়ার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন অভিযোগটি তদন্ত করেন। তিনি নিজ কার্যালয়ে মামলার বাদিসহ চারজনের মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার বাদি পিবিআই সদর দপ্তর ও পুলিশ হেডকোয়ার্টারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সবুজ আলীর বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের লিখিত অভিযোগ করেন। এসআই সবুজ আলী বগুড়ার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত আছেন।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ধুনট পৌর এলাকার অফিসার পাড়ার কলেজ শিক্ষক দম্পতির স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে সর্বশেষ ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল ধর্ষণ ও সেই দৃশ্য নিজের মুঠোফেনে ভিডিও ধারণ করে প্রভাষক মুরাদুজ্জামান (৫০)। এরআগেও মুরাদুজ্জামান মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। মুরাদুজ্জামান উপজেলার শৈলমারি গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে এবং জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মেয়েটির মা বাদি হয়ে ২০২২ সালের ১২ মে ধুনট থানায় মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেন ধুনট থানার তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা। ওই মামলায় মুঠোফোনসহ মুরাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই সময় মুরাদুজ্জামান পুলিশের কাছে দোষ স্বীকার করে। এছাড়া মুরাদুজ্জামানের কাছ থেকে জব্দকৃত মুঠোফোনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমান পেয়েছে পুলিশ। এ অবস্থায় মামলা তদন্তকালে ওসি কৃপা সিন্ধু বালা আসামির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে জব্দকৃত মুঠোফোন থেকে ধর্ষণের ভিডিওসহ বেশকিছু আলামত নষ্ট করে। বিষয়টি বুঝেতে পেয়ে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন মামলার বাদি। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে ধুনট থানা থেকে প্রত্যাহার করে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায়। এরপর কয়েক দফা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়ে সর্বশেষ বগুড়া পিবিআই’র এসআই সবুজ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার সাক্ষিরা মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য দেন। কিন্তু সাক্ষিদের দেওয়া প্রকৃত সাক্ষ্য গোপন করে এসআই সবুজ আলী মনগড়া ভাবে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে মামলায় অর্ন্তভুক্ত না করে ২৪ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ অবস্থায় মামলার বাদির নারাজীর আবেদেন ১৫ আগস্ট মঞ্জুর করে স্মপূরক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বগুড়া পিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বর্তমানে মামলাটি পিবিআই তদন্তাধীন রয়েছে। আসামি মুরাদুজ্জামান কারাগারে আটক আছে।