চট্টগ্রাম

লোহাগড়ায় তুষার কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে কঠিন চিবর দান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে

কামরুল ইসলাম চট্টগ্রামঃ
০৩ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্ধ ১৮কার্তিক১৪৩০ বঙ্গাব্দ ২৫৭৬শুক্রবার লোহাগাড়া উপজেলার মুস্তাফিজুর রহমান কলেজ মাট প্রাঙ্গনে বৌদ্ধ এক্য পরিষদের সভাপতি জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লোহাগাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি তুষার কান্তি বড়ুয়া সভাপতিত্বে। প্রিয়র্দশী বড়ুয়া সাধারণ সম্পাদক সাতকানিয়া লোহাগাড়া বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের পরিচালনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা নারী জাগরণের অগ্রদূত চট্টগ্রাম দক্ষিণ আওয়ামী মহিলা লিগের সাংগঠনিক ববিতা বড়ুয়া, এই সময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিল্পপতি অরুণ বড়ুয়া জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব ও লোহাগাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব কামরুল ইসলাম জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লোহাগাড়া উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম উদ্দিন খাঁন, লোহাগাড়া উপজেলা শাখার তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সুমত রঞ্জন বড়ুয়া, এই সময় বক্তারা বলেন কঠিন চীবর দান বৌদ্ধ ধর্মের মানুষ কঠিন চীবর দান, বৌদ্ধ ধর্মের একটি ধর্মীয় আচার, ও উৎসব, যা সাধারণত বাংলা চন্দ্রপঞ্জিকা অনুযায়ী প্রবারণা পূর্ণিমা (শারদ পূর্ণিমা বা আশ্বিন মাস মাসের পূর্ণিমা) পালনের এক মাসের মধ্যে যেকোনো সুবিধাজনক সময়ে পালন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে মূলত বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে ত্রি-চীবর নামে বিশেষ পোশাক দান করা হয়।[১] ধর্মাবলম্বীগণ পূণ্যের আশায় প্রতি বছর এভাবে চীবরসহ ভিক্ষুদের অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রীও দান করে থাকেন।ত্রি-চীবর হলো চার খণ্ডের পরিধেয় বস্ত্র, যাতে রয়েছে দোয়াজিক, অন্তর্বাস, চীবর ও কটিবন্ধনী।

এই পোশাক পরতে দেয়া হয় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে, সাধারণত আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পোশাক বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে দেয়া হয়। এই পোশাক তৈরি করার জন্য প্রস্তুতিস্বরূপ প্রথমে তুলার বীজ বোনা হয়, পরে তুলা সংগ্রহ করা হয়, তা থেকে সুতা কাটা হয়, সেই সুতায় রং করা হয় গাছ-গাছড়ার ছাল বা ফল থেকে তৈরি রং দিয়ে, এবং সবশেষে নানা আচার-অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মেনে মাত্র ২৪ ঘণ্টায়, অর্থাৎ এক দিনের ভিতর তৈরি করা হয় এই ত্রি-চীবর। এই পোশাক বোনায় ব্যবহার করা হয় বেইন বা কাপড় বোনার বাঁশে তৈরি ফ্রেম। এরকম বেইনে একসঙ্গে চারজন কাপড় বুনে থাকেন।

এভাবে ২৪ ঘণ্টা পর তৈরি হওয়া সেসব পবিত্র চীবর, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হাতে তুলে দেয়া হয় কঠোর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে।[১] এভাবে চীবর দেয়া হলে কায়িক-বাচনিক ও মানসিক পরিশ্রম বেশি ফলদায়ক হয় বলে বৌদ্ধ শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে।[৩] এভাবে সাধারণ্যের কঠোর পরিশ্রমে তৈরি চীবর, বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে দান করার বিষয়টি প্রতিদানহীনভাবে কল্যাণের নিমিত্ত কাজ বৈ আর কিছু নয় এবং এজাতীয় অনুষ্ঠান সমাজে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করবে বলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস। তাছাড়া বুদ্ধের বাণী হলো, কঠিন চীবর দানই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দান।

এই বিভাগের আরও খবর

Back to top button