চট্টগ্রাম

লোহাগড়ায় সরকারের দেয়া মূল্য না মেনে মন্দযক্ষা মতে গ্যাসের মূল্য নিচছে বিক্রেতারা

কামরুল ইসলামঃ
আগস্ট মাসের চেয়ে ১৪৪ টাকা বাড়িয়ে সেপ্টেম্বরে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ দাম ১২৮৪ টাকা নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিইআরসি। তবে লোহাগাড়ায় নির্ধারিত এই দামে এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি করছেন না পাইকারি এবং খুচরা বিক্রেতারা । পাইকারিতেই প্রায় সব কোম্পানি এসব সিলিন্ডার বিক্রি করছে ১ হাজার ২৬০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায়। আর খুচরা পর্যায়ে ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায়।

দেশে এলপিজির ব্যবহার শুরুর পর বেসরকারি লোহাগাড়ার পাইকারী ও খুচরা বিক্রিতা গুলো ইচ্ছেমতো এলপিজি সিলিন্ডারের দাম আদায় করে আসছিল। এ নৈরাজ্য বন্ধ করতে ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি মাসে দেশে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি। সম্প্রতি বিশ^বাজারে এলপিজির প্রধান উপকরণ- প্রোফেন ও বিউটেন’র দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় পরপর দুই মাস দেশে এলপিজির দাম বাড়িয়েছে বিইআরসি। এরপরেও চট্টগ্রামে বিইআরসি নির্ধারিত দামে ভোক্তারা এলপিজি সিলিন্ডার পাচ্ছেন না। প্রতিমাসে লোহাগাড়ায় প্রায় ১ লাখ সিলিন্ডার বিক্রি হয়। প্রতিটি সিলিন্ডারে একজন ভোক্তাকে বিইআরসি নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৫০-২০০ টাকা বাড়তি গুণতে হচ্ছে। বাজার তদারকির অভাব লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) সহকারী কমিশনার ভূমি এবং এলপিজি বিক্রিতে শৃঙ্খলা না থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ডিস্ট্রিবিউটররা জানিয়েছেন, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলিন্ডার প্রতি ওমেরা ১৩০০ টাকা, ডেল্টা ও জেএমআই ১২৪০ টাকা, বিএম ১২৬০-১২৭০ টাকা, পেট্রোম্যাক্স ১৩০০ টাকা, টোটাল ও লাফ ১২৮০ টাকা দরে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোম্পানি ও স্থানভেদে এসব সিলিন্ডার ১৪০০-১৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সিলিন্ডারের বাড়তি দামের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলপি গ্যাস এ-ডিলার বলেন, ডলার সংকটের কারণে কোম্পানিগুলো সিলিন্ডার সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। বাড়তি দাম দিয়েও সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে পাইকারি বাজারে সিলিন্ডারের দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।

তিনি বলেন, নীতিমালা না মেনে যেখানে সেখানে সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে। এই কারণে খুচরা বাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। যে যেভাবে পারছে সেভাবে দাম আদায় করছে। আগের মতো নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট ডিলারের মাধ্যমে সিলিন্ডার বিক্রি করলে শৃঙ্খলা থাকতো। ভোক্তারা উপকৃত হতো। সরকারি সংস্থাগুলোও সহজে বাজারে নজরদারি করতে পারতো।

সরকার নির্ধারিত দামে এলপিজি সিলিন্ডার কিনতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। নগরীর পুটিবিলা এলাকায় এলপিজির সিলিন্ডার কেনার সময় কথা হয় আসহাব উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি গণমাধ্যম কে বলেন, সবাই ব্যবসায়ীদের কথা ভাবে। ভোক্তাদের কথা কেউ ভাবে না। এ কারণে ১২৮৪ টাকার সিলিন্ডার ১৪৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

বাজার মনিটরিংয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে না । বিশিষ্ট জনরা গনমাধ্যেমকে বলেন, এলপি গ্যাসের দাম সরকার যা নির্ধারণ করে দিয়েছে, এর চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করার সুযোগ নেই। কোম্পানি বা বিক্রেতা- যারা বেশি দামে বিক্রি করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন।

এই বিভাগের আরও খবর

Back to top button