চট্টগ্রাম

ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর থেকে লোহাগাড়া স্টেশন ও কেরানী হাটে যানযট সৃষ্টি হয়েছে।

কামরুল ইসলাম চট্টগ্রামঃ
নিত্য যানজটে নাভিশ্বাস চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া সদর এবং কেরানী হাটে নিত্যদিনের যানজটে নাভিশ্বাস চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়াবাসী। ভেঙে পড়েছে লোহাগাড়া ও কেরানী হাট সদরের ট্রাফিক ব্যবস্থা। নিত্য যানজটে নাভিশ্বাস লোহাগাড়াবাসী। যানজটের কারণে বিদেশগামী যাত্রী, অ্যাম্বুলেন্সের রোগী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন । অবৈধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন, সড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং, শতশত অবৈধ রিকশা এবং সিএনজির দাপটে ফুটপাত দখল করে হকার বাণিজ্য এবং সড়কের ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যানবাহন চলাচল করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।এদিকে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নগরীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত ট্রাফিক পুলিশ আগের মতো কঠোর হচ্ছে না। এ সুযোগ নিচ্ছেন লোহাগাড়া সাতকানিয়ার অবৈধ চালক-মালিকরা।ট্রাফিক পুলিশ বাধ্য হয়ে হাতের ইশারায় লাঠি দিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছে। লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া থানার ট্রাফিক পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে ট্রাফিক আইন অমান্য করায় বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে বেশকিছু মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় কয়েক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সচেতন মহল জানিয়েছে, লোহাগাড়া ও কেরানী হাটে একসময় এত যানযট ছিলনা। লোহাগাড়া ও কেরানী হাটে কোন ধরনের সিগন্যাল লাইট না থাকার কারণে চালকরা উল্টা পাল্টা গাড়ি পার্কিং দায়ী। লোহাগাড়া ও কেরানী হাটের সচেতন মহল জানিয়েছে, লোহাগাড়া ও কেরানী হাট সদরে অনুমোদন হীন গাড়ি লাইসেন্স বিহীন চালকদের কারণে এই যানযট সৃষ্টি হয়। সেগুলোর মধ্যে অটোরিক্সা অবৈধ সিএনজির কারণে সদরে যানযট এই চাড়া লোহাগাড়া ও কেরানী হাটে নাই কোন বাস টার্মিনাল। বর্তমানে যেই গাড়ি গুলো রয়েছে সেইগুলো অধিকাংশই ত্রুটিপূর্ণ এবং বিআরটিএ’র নিবন্ধনহীন। সড়কের উপর যাত্রী পরিবহন, যাত্রী ওঠানামায় নেই কোনও শৃঙ্খলা। যানজটের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলাবাসী
সরেজমিন দেখা গেছে, পদুয়া, আমিরাবাদ, আদুনাগর,
চুনতী সহ কেরানী হাট সব স্টেশনে সবসময় লেগে আছে যানযট। এ ছাড়াও সড়কে দেখা গেছে, যাত্রী নেওয়ার জন্য একই সড়কের গাড়ির একটির সঙ্গে আরেকটির প্রতিযোগিতা, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, সড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং, সড়কের পাশ ঘেঁষে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন মার্কেট গড়ে উঠলেও রাখা হয়নি পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা। এসব কারণেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।যানজট প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লোহাগাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম কে বলেন, এক সময় অলি-গলিতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলাচল করতো ব্যাটারিচালিত রিকশা ও সিএনজি। গত ৫ আগস্টের পর এসব রিকশা সিএনজি হাইওয়ে সড়কে দাপটের সাথে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশকেও এ বিষয়ে তেমন কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। এ ছাড়াও অনুমোদনহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ম্যাক্সিমা, ব্যাটারিচালিত টমটমসহ অন্যান্য যানবাহন গুলো হাইওয়ে সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তার ওপর সড়কে আছে লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা ফিটনেসবিহীন একাধিক বাস, টেম্পুসহ বিভিন্ন গণপরিবহন। এসব গাড়ি সড়কে যানজট বাড়াচ্ছে। লোহাগাড়া সদরের ব্যবসায়ী মহল বলেন, লোহাগাড়া সদরের যানজটের মূল কারণ অটোরিক্সা, সিএনজি, টমটম, এবং পিকাআপ, এর সাতে ঈগল গাড়ি গুলো। হাইওয়ে সড়কে ঈগল গাড়ি গুলোর কারণে যানবাহন কমার পরিবর্তে বেড়েছে। লোহাগাড় হাইওয়ে সড়কে গত কয়েক বছরে ৫০০/৭০০ শত অবৈধ যানবাহন ছিল। তার ওপর ৫ আগস্টের পর সড়কে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা আরও বেড়েছে।’
বিভিন্ন মহল বলেন,লোহাগাড়ায় কমপক্ষে দশ হাজারের বেশি অবৈধভাবে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে। লোহাগাড়ার অলি-গলিতে অবৈধ রুট সৃষ্টি করে এসব অটোরিকশা চলাচল করছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একাধিকবার প্রশাসনকে বলেছে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা কিন্তু বন্ধের কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না প্রশাসন। অবৈধ সিএনজি অটোরিকশার পাশাপাশি, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, টমটম, ব্যাটারিরিকশা, মাহিন্দ্র, ম্যাক্সিমাসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ আজিজ নগর থেকে দোহাজারী হাইওয়ে পযন্ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলার ট্রাফিক বিভাগের দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন আমাদের মূল লক্ষ্য, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা। একটি শহরকে শৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য ২৫ শতাংশ সড়কের প্রয়োজন। তবে দোহাজারী হাইওয়ে সড়কে আছে মাত্র ১০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে পার্কিংয়ের সংকট। অতি দ্রুত দোহাজারী, কেরানীহাট, আমিরাবাদ স্টেশন গুলোতে পার্কিং প্লেস নির্ধারণ করা জরুরি। রাজনৈতিক নেতারা বলেন, দোহাজারী, কেরানী হাট, আমিরাবাদ কে যানজটমুক্ত করতে, চট্টগ্রাম জেলা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিসহ সংশ্লিষ্ট সবগুলো সেবা সংস্থার সমন্বিত কার্যক্রম প্রয়োজন। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হলে যত্রতত্র বাসসহ যেকোনও যানবাহন দাঁড়াতে পারবে না। যাত্রী ছাউনি, বাসস্টপেজ যেখানে থাকবে সেখানেই দাঁড়াতে হবে। এ জায়গায় আমাদের কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে। যত্রতত্র যানবাহন দাঁড়ানোর কারণে কেবল যে যানজট বাড়ছে তা নয়, বরং সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এই অব্যবস্থাপনা।

এই বিভাগের আরও খবর

Back to top button