মোঃ নাজমুল হাসান বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ধুনটে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার বিক্রি, জিম্মি কৃষকরা রবি মৌসুমের শুরুতে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। বিশেষ করে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের অভিযোগ, পরিবেশকরা (ডিলার) কৃষকদের কাছে সার বিক্রি না করে অতিরিক্ত দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। পরে সেই সার খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।এরপরও চাহিদামতো সার পাচ্ছেন না। যদিও কৃষি অধিদপ্তর সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় বিসিআইসি ডিলার ১১ জন ও সাব-ডিলার ৪৭ জন এবং বিএডিসির ২০ জন ডিলার রয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে ৫০ হাজার ৫০১ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফসল চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে জমিতে কৃষকরা টিএসপি, এমওপি, ডিএপি ও ইউরিয়া সার ব্যবহার করেন। তবে এসব ফসল উৎপাদনে যে পরিমাণ সারের প্রয়োজন, অক্টোবর মাসে সেই চাহিদার অর্ধেকেরও কম সারের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে টিএসপি ৫৬০ মেট্রিক টন চাহিদার অনুকূলে ১৭৩ টন, এমওপি ৪৭৫ টনের অনুকূলে ২৭২ টন, ডিএপি ৪৯০ টনের অনুকূলে ৩৮৮ টন, ইউরিয়া ৪৯০ টনের অনুকূলে ৩৮৩ টন এবং নভেম্বর মাসে টিএসপি ৫৫০ মেট্রিক টন চাহিদার অনুকূলে ২৩১ টন, এমওপি ৫৬২ টনের অনুকূলে ৩৩৫ টন, ডিএপি ৯৫৯ টনের অনুকূলে ৫০৬ টন ও ইউরিয়া এক হাজার ১৬০ টনের অনুকূলে ৫৭৭ টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। লাল শাপলার মোহনীয় রূপে সেজেছে তারাপুরের ফসলের মাঠ লাল শাপলার মোহনীয় রূপে সেজেছে তারাপুরের ফসলের মাঠ আজ শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতারা দোকানে মূল্যতালিকা টাঙিয়ে রাখলেও সেই অনুযায়ী বিক্রি করছেন না। তারা প্রতি বস্তা সার সরকারি দামের চেয়ে ৭০ থেকে ১৮০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছেন। সার কিনতে গেলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সংকটের কথা বলেন। তবে দাম বেশি দিলেই সার বের করে দিচ্ছেন। এ ছাড়া বিক্রেতারা কৃষকদের কোনো সঠিক বিক্রি রসিদ দেন না। যেটা দেন তার চেয়ে তাদের বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হয়। ডিলারদের কাছে এভাবে জিম্মি হয়ে তারা অসহায় বোধ করছেন। সরকার অনুমোদিত এই ডিলাররা সরকারি নির্দেশনা না মানায় দেখা দিয়েছে সারের কৃত্রিম সংকট। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। তবে এ বিষয়ে ডিলারদের দাবি, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে বাজারে সারের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামেই সার বিক্রি করছেন তারা।ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছামিদুল ইসলাম বলেন, এখন সারের কোনো ঘাটতি নেই। এরপরও কোথাও কোথাও সংকটের অজুহাতে বেশি দামে সার বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রির জন্য তাদের তদারকি অব্যাহত রয়েছে। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, সার নিয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।