কামরুল ইসলাম চট্টগ্রামঃ
গাংনী উপজেলা শহরে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের জন প্রশাসন মন্ত্রীর ঘনিষ্টজন সাবেক সচিব আলকামা সিদ্দিকীর বাড়ি বাঁচাতেই কৌশলে আন্দোলন সৃষ্টি করে রাস্তার কাজ বন্ধ রেখেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ফলে গাংনী উপজেলা শহরে যেমন বেঁড়েছে যানজট, তেমনি দীর্ঘদিন যাবৎ রাস্তার উভয় পাশে খুঁড়ে ফেলে রাখায় বেড়েছে ডেঙ্গু মশার উৎপাত। এদিকে সড়ক বিভাগের এই অপকৌশল কাজে লাগাতে ব্যবহার করছে মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেকের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা বজলুর রহমান বুলু আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট নেতা হাজী মহসীন আলী স্থানীয় আওয়ামীলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে। এদিকে সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইনগুলোতে গাংনী বাজারের উপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীরা বেদখল করে বহুতল বাড়ি ও মার্কেট নিমার্ণ করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করার উপর সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর শুরু হয়েছে প্রতিক্রিয়া। অভিযোগ উঠেছে, মেহেরপুর—কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী বাজারের উপর সওজের জমি বেদখল করিয়ে তাদের কাছ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকা। যে কারনে, প্রভাবশালীদের দখলে থাকা এসব জমি উদ্ধার করছেনা সওজ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা অভিযোগ, সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) মিজানুর রহমান তাদের অবৈধ আয়ের উৎস আড়াল করতে এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির লক্ষে কাজ বন্ধ করে ভোগান্তীতে ফেলেছে গাংনী উপজেলাবাসীকে। সরেজিমনে দেখা গেছে, প্রায় সাড়ে ৬’শ কোটি টাকা ব্যায়ে মেহেরপু—কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ফোরলেনসহ নির্মাণ কাজের গাঁড়াডোব থেকে খলিশাকুন্ডি পর্যন্ত অধিকাংশ কাজ সমাপ্ত হলেও গাংনী বাজারের কয়েক শ মিটার ফেলে রেখে ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে। গাংনী উপজেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে ত্রিভুজ চত্ত¦র করে একনেক থেকে রাস্তার ডিজাইন পাশ হয়ে আসলেও সেই ডিজাইন অনুযায়ী তিনি কাজ না করে গড়িমশি শুরু করছেন। মেহেরপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান স্থানীয়দের মধ্যে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন উস্কে দিয়েছে।
দখল করে রাখা প্রভাশালীদের দিয়েই এই আন্দোলন উস্কে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গাংনী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রফিক। তিনি বলেন, সওজের প্রচুর যায়গা থাকার পরেও সেগুলো উদ্ধার করেনি কতৃর্পক্ষ। তারা তাদের নিজস্ব জমি ফেলে রেখে জেলা পরিষদের যায়গা দখল করার পায়তারা করছে। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে মেহেরপুর কোর্টে একটি রিট পিটিশন করা হয়েছে। আদালত ইতোমধ্যে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া সওজের জমি নতুন করে পরিমাপের জন্যও জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন দেওয়া হয়েছে। অথচ, সড়ক বিভাগ মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে তাদের নিজস্ব জমি প্রভাবশালীদের কাছ থেকে উদ্ধার করছে না। স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের আওতায় জেলা পরিষদের নিজস্ব যায়গা দখল করার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, আওয়ামীলীগ আমলের সাবেক সচিব আলকামা সিদ্দিকীর বাড়িটির পেছন পর্যন্ত সড়ক ও জনপথের জমি। এছাড়া আন্দোলনে নেতৃতৃ¦ দানকারী গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি সালাহ উদ্দীন শাওন, এসএম পাস্নাজার মালিক রবিউল ইসলামসহ অন্যান্যরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি দখল করে বহুতল ভবন ও মার্কেট নির্মাণ করেছেন। সড়ক বিভাগের ডাকে আন্দোলনে না গেলে তাঁদের বহুতল ভবন ও মার্কেট ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী। একটি সূত্র জানায়, জেলা পরিষদের যায়গা দখল নেওয়ার জন্য উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) মিজানুর রহমান কয়েকজন প্রভাবশালী দখলদারদের সাথে চুক্তি করেন। চুক্তিমতে, গাংনী বাজারের উপর জেলা পরিষদের যায়গায় নির্মিত যাত্রী ছাউনি ও তার সাথে দুটি দোকান ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নাহলে তাদের কাছ থেকে সড়ক ও জনপথের যায়গা মুক্ত করা হবে। এসডিই মিজানুর রহমানের এই হুমকীর কারনেই সরকারী জমি দখলদার এসব দোকান ও মার্কেট মালিকরা আন্দোলনের নামেন। এব্যাপারে এসডিই মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগের জন্য তার মুঠোফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।