সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি ।তাদের দখল ও চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকার ব্যবসায়ী ও জনসাধারণ। চাঁদা দাবি, আদায়, বাড়ীঘর দোকানপাট ভাঙচুর, সম্পত্তি দখলসহ তারা নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে । ইতোমধ্যে অনেককে ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এই চক্রের মুল হোতা নগরঘাটা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার মোড়ল। এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য ও নব্য বিএন পি নেতা আলিম ও আরও কিছু লোকের বিরুদ্ধে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে স্থানীয় বিএনপির নেতা কর্মীরাও চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়েছে এবং অনেকে মানসন্মান বাঁচাতে দলীয় কর্মকান্ডে কম অংশগ্রহণ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের আগে যারা চাঁদা তুলত ও অপকর্মে জড়িয়ে ছিল, তাদেরকে সরিয়ে এই স্থান দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা। জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর জনসাধারণের তোপের মুখে পড়ে ২নং নগরঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা কামরুজ্জামান লিপু ও তার পরিবার।অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ও তার স্ত্রীর কবি নজরুল বিদ্যাপীঠে চাকরি অব্যাহত রাখার শর্তে একটি বড় অঙ্কের টাকা কামরুজ্জামান লিপুর কাছ থেকে আদায় করে আক্তার মোড়লসহ আরো বেশ কিছু লোকজন। তাছাড়া কবি নজরুল বিদ্যাপীঠ, নগরঘাটা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নগরঘাটা আলিম মাদ্রাসাতে ইতিপূর্বে লিপু চেয়ারম্যান সভাপতি থাকাকালীন সময়ে শিক্ষক, পিয়ন, ঝাড়ুদার,নাইট গার্ড ইত্যাদি পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের কর্মক্ষেত্রে যেতে বাধা দেয় এবং পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দফারফা হয় বলে জানা গেছে।তারা স্থানীয় শিল্পপতি ইবাদুল হাজীর মাছের খামার দখলে নিয়ে প্রায় ১২/১৪ লাখ টাকার মাছ লুট করে নেয় বলে এলাকাবাসীরা জানায়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে নগরঘাটা ইউনিয়নে গ্রামবাসী একদল মাছ চোরকে ধাওয়া করে একজনকে ধরে ফেলে। পরে আক্তার মোড়লের নেতৃত্বে কতিপয় ব্যক্তি আইনে ব্যবস্থার নাম করে তাকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে জানা যায়, ঐ চোর ও তার দলের অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে তাদেরকে মুক্তি করে দেয়। জানা গেছে, গ্রামবাসীর চোর ধরার ঘটনার একটি ভিডিও স্থানীয় এক সাংবাদিক তার নিজস্ব ফেসবুক পেজে পোস্ট করে। পরবর্তীতে আক্তার মোড়ল ও তার লোকজন ঐ সাংবাদিককে শারীরিক ভাবে অপদস্থ করে এবং ভয়ভীতি দেখায়ে ঐ ভিডিও পোস্ট ডিলিট করতে বাধ্য করে।অভিযোগ উঠেছে, ১৫০ জনের কাছ থেকে পাঁচ বছরের জন্য জমি ডিড বা ইজারা নিয়ে ঘের করত স্থানীয় বেশ কিছু ব্যক্তি। এই ঘেরও দখলে নিয়েছে তারা। এ বিষয়ে পাটকেলঘাটা থানায় একটি অভিযোগও দায়ের হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, আক্তার মোড়ল ও তার লোকজন বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে, যারা চাঁদা দিতে রাজি হয়নি তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়ে এলাকা ছাড়া করছে। স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে বলে তারা শুনেছে এবং তারাও এ সব ঘটনাগুলোর প্রতিকার চায়। কেউ যদি এসব কাজে জড়িত থাকে, তবে তার দায় তাদেরকেই নিতে হবে।