চট্টগ্রাম

মেয়েকে দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পুলিশ সদস্যের বিয়ের নামে চলছে কাবিন ব্যবসা

কামরুল ইসলাম চট্টগ্রামঃ
প্রেমের ফাঁদে লেলিয়ে নিজের মেয়েকে দিয়ে তরুণ ব্যবসায়ী যুবক এর কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঐ নারীর পুলিশ কনষ্টেবল বাবার বিরুদ্ধে। চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল মাসুদ আলমের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠে। সম্প্রতি এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম জানান, আমার পিতা বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত থাকার সুবাদে চট্টগ্রামস্থ দামপাড়া পুলিশ লাইনে চাকুরী করাকালীন সময়ে পুলিশ কনস্টেবল মাসুদ আলমের সাথে আমাদের পারিবারিক ভাবে যোগাযোগ ও সম্পর্ক দৃঢ় হয় । আমার বুঝ-জ্ঞান হওয়ার পর হতে মাসুদ আলমের সাথে তার বাসায় যাওয়া আসা করি । আমি পড়াশোনার পাশাপাশি নিজ উদ্দ্যোগে বিভিন্ন ব্যবসা করে সাবলম্বি হওয়ার চেষ্টা করি। এসুযোগে মাসুদ আলমের লোভ লালসা আমার প্রতি বাড়তে থাকে। এছাড়াও তিনি এবং তার মেয়ে আমার বাসায় যাওয়া আসার সুবাদে তার মেয়েকে দিয়া আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আমি মাসুদ আলম ও তার পরিবারের অসৎ উদ্দেশ্যে বুঝতে না পেরে তার মেয়ে সানজিদা জাহানের প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ করি। পরবর্তীতে তার মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক বাড়তে থাকে। ভুক্তভোগী আরো বলেন, আমি তার সাথে বিয়ের পরিকল্পনা করে ও তার বাবার পরামর্শে মেয়ের যাবতীয় লেখাপড়ার খরচ বহন করি, কারন তার বাবার আয় কম থাকায় মেয়ের ব্যয়বহুল পড়া লেখার খরচ বহন করা তার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। আমার থেকে বিগত ২০১৭ সালের জুন মাস থেকে ২০২৩ ইং পর্যন্ত সানজিদা জাহান বিভিন্ন খরচ এর কথা বলে ১১ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা নেয়। এরপর বিয়ের আশ্বাসে ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর দেখা করতে বলে আমাকে মাসুদ আলিমের শ্যালক মো:সাইফুল ইসলামসহ সাত / আট জন তুলে নিয়া অজ্ঞাত স্থানে আটক করে রাখে। সে সময় আমার সাথে থাকা ব্যবসায়ীক নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ওই স্থানে জোরপূর্বক কয়েকটি ষ্ট্যাম্প ও বালামে স্বাক্ষর নিয়ে তারা সানজিদা জাহান এর সাথে আমাকে বিবাহ করিয়ে দেয় । সানজিদা জাহান অল্প কিছু দিন আমার সাথে সংসার করিলেও পরবর্তীতে তার বাবার ইন্ধনে আমার নিকট হতে বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করতে থাকে। আমি সানজিদা জাহানকে কোন রকমে বুঝ পরামর্শ প্রদান করে সংসার করার চেষ্টা করি। একপর্যায়ে সানজিদা জাহানকে দিয়ে তার বাবা ঋণ পরিশোধের নামে আমার থেকে ছয় লক্ষ টাকা নগদ দাবী করে। আমি টাকা প্রদান করিতে অস্বীকৃতি জানালে ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ আমার কর্মস্থলে চলে গেলে আমার শশুর বাসায় এসে তার মেয়েকে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার সময় আমার বাসা হইতে আলমারিতে রক্ষিত ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ২লাখ ৪৮ হাজার টাকা, বাসার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, মোটর বাইকের ১ সেট চাবি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ১ সেট চাবি, ইসলামী ব্যাংকের চেক , ডি.বিবি.এল এর চেক , সিটি ব্যাংকের এর চেক, ৩টি মোবাইল ফোন, ২টি পেনড্রাইভ সহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান আমি কর্মস্থল হতে ফিরে আমার স্ত্রীকে দেখতে না পেয়ে ফোন করলে জানতে পারি সে তার বাবার বাড়িতে গিয়েছে। আমি সেদিন বিকেলে তাকে আনতে গেলে মাসুদ আলম (শশুর) সহ অজ্ঞাত আরো দুই-তিন জন ব্যক্তিসহ আমাকে খুন করার উদ্দেশ্যে এলোপাতারি মারধর করে আমি প্রাণ রক্ষার জন্য চিৎকার করিলে পথচারী লোকজন আমাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠায়। আমি চট্টগ্রাম মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরি। পরবর্তীতে আমার স্ত্রীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মাসুদ আলম ও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে আমাকে জানে মেরে ফেলবে ও মিথ্যা মাদক ও অস্ত্র মামলায় ফাসাবে বলে হুমকি প্রদান করেন। সবশেষ গত ১৯/০৩/২০২৪ তারিখে তার সানজিদা জাহান (স্ত্রী) কে দিয়ে আমাকে তালাক প্রদান করান। কিন্তু এ বিষয়ে আমি জ্ঞাত না থাকায় আমি আবারো বিগত ২৩/০৩/২০২৪ তারিখে আমার স্ত্রীকে ফেরৎ আনতে গেলে মাসুদ আলম (শশুর) আবারো আমাকে মারধর করে আহত করেন। এরপর আমি চসিক’র মেয়র মহোদয় সালিশী কাউন্সিলর বৈঠকে গিয়ে আমার নগদ টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার ফেরৎ চাইলে মাসুদ আলম (শশুর) আমাকে গুম ও খুনের হুমকি প্রদান করে। সুতরাং এই লোভী কাবিন ব্যবসায়ী পুলিশ সদস্য মাসুদ আলম ও তার মেয়ে আমার সাবেক স্ত্রী সানজিদা জাহান সহ এই চক্রের দ্রুত বিচার দাবি করছি এবং সেই সাথে আর কোন পুরুষের জীবন যাতে এভাবে নস্ট না হয় সেজন্য দেশবাসীকে এই কাবিন ব্যবসায়ী প্রতারক চক্রকে চিনে রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এই বিভাগের আরও খবর

Back to top button