ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে এক গ্রাম্য শালিসে ৫১ হাজার টাকায় রফাদফা হয়েছে ধর্ষণের ঘটনা। তবে মিমাংসার সেই ৫১ হাজার টাকা ভুক্তভোগী নারীকে না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বড়বাড়ী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার(২৩ এপ্রিল) ভোর ৫ টায় এক গোপন শালিসে ভুক্তভোগী নারীকে ডেকে নিয়ে জোর করে স্ট্যাম্প কাগজে লিখিত নেন ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী। তবে সেসময় ৫১ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলে টাকা পায়নি ভুক্তভোগী।জানাগেছে, ব্লাকমেইল করে দীর্ঘদিন থেকে এই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে আসছিল বালিয়াডাঙ্গী কেবিএম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী লতিফুর ইসলাম(৪০)। একপর্যায়ে সেই ভুক্তভোগী নারী অতিষ্ঠ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
ধর্ষণের শিকার নারী জানান, লতিফুর ইসলাম চাকুরীর পাশাপাশি বিকাশের ব্যবসার সাথে জড়িত। বছর খানেক আগে বিকাশে আসা টাকা নিতে লতিফের কাছে গেলে এই নারীকে ধর্ষণ করে লতিফুর। পরবর্তী সময়ে ধর্ষণের ঘটনার মোবাইল ভিডিও রেকর্ড স্বামীকে দেখানোর ভয় দেখিয়ে বার বার ধর্ষণ করে আসছিলেন তিনি।
ভুক্তভোগী এই নারী বলেন, বিষয়টি জানাজানি হবার পর আমার স্বামী আমাকে আর মেনে নিবেনা বলে জানিয়েছে। আর লতিফ ও তার লোকজন প্রতিনিয়ত আমাকে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। এদিকে চাপ প্রয়োগ করে তারা আমার কাছে লিখিত নিয়েছে। তখন আমাকে ৫১ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও সেই টাকা আমি পাইনি।
৫১ হাজার টাকায় মিমাংসার বিষয়টি স্বীকার করে ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী বলেন, দুপক্ষের কথা শুনে আমি বুঝতে পেরেছি ছেলে মেয়ে দুজনেই দোষী। তাই ৫১ হাজার টাকায় বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি। সেই সাথে উভয় পক্ষের কাছে লিখিত নিয়ে নিয়েছি। মিমাংসায় উপস্থিত একই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম বলেন, ৫০ হাজার ৫০০ টাকায় বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি।
তবে এরকম ধর্ষণের ঘটনা মেম্বার পর্যায়ে মিমাংসার সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তেমন বড় কিছুনা। তাই মিমাংসা করে দিয়েছি।এই বিষয়ে জানতে লতিফুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি মিমাংসা করে ফেলেছি। এটা নিয়ে আর কিছু বলার নাই।বালীয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফিরোজ বলেন, বিষয়টি শুনেছি, তবে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। মহিলা যদি আইনের আশ্রয় নেয় সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।