মোঃ আশরাফুল নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ঝিনাইদহের চিহ্নিত চার সুদখোরের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা হয়েছে। সুদখোরদের বিরুদ্ধে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করা সিরাজুল ইসলাম সুরুজের স্ত্রী সফুরা খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলাটি গ্রহন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন, সদর থানার হলিধানী ইউনিয়নের কুখ্যাত সুদখোর কোলা গ্রামের আবু বক্কর মাষ্টারের ছেলে ফারুক ডাক্তার, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নয় মাইল গ্রামের তরিকুল ইসলাম, হলিধানী বাজারের লুৎফর রহমানের ছেলে আনিছুর রহমান আনিচ ও সোনারদাইড় গ্রামের সৈয়দ আলী মেম্বরের ছেলে মতিয়ার রহমান। সফুরা খাতুন তার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার স্বামী সুরুজের হলিধানী বাজারে কনফেকশনারীর দোকান আছে। ব্যবসাায়ীক প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় উল্লেখিত আসামীদের কাছ থেকে টাকা ধার করে ব্যবসা বাজিন্য করতেন। ধারের এই টাকা পরিশোধও করে দেন।
কিন্তু হঠাৎ একদিন আসামীরা জোটবদ্ধ হয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে তার ছেলে সাজেদুল ইসলাম শাকিলের হাতে একটি লিগ্যাল নোটিশ ধরিয়ে দেন। তখন আমার স্বামী ও ছেলে ধারের টাকা সম্পুর্ন পরিশোধ করার কথা জানালে আসামীরা আমার বাড়ির উঠানে দাড়িয়ে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করে। এতে আমার স্বামী সুরুজ মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং গত ৮ সেপ্টম্বর বাড়ির দুই তলার ঘরে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে। সফুরা খাতুনের অভিযোগ আমার স্বামীর আত্মহত্যার পেছনে আসামীদের প্রকাশ্যে হাত রয়েছে। তাদের প্ররোচনায় আমার স্বামী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আত্মহত্যার সময় সুরুজের পকেটে পাওয়া চিরকুটে উল্লেখ ছিল “সুদখোরদের অত্যাচারে বাঁচতে পারলাম না, আমার জায়গা-জমি বাড়ি সব বিক্রি করে দিয়েছি। একেক জনের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া তার সাত আট দশগুণ পরিমাণ টাকা দিয়েও রেহাই দিলো না তারা। কেউ কেস করেছে কেউ কেউ অপমান অপদস্ত করেছে আমি আর সহ্য করতে পারছিনা তাই বিদায় নিলাম।
আমার জানাযা হবে কিনা জানিনা। যদি হয় তখন সব সুদখোররা টাকা চাইতে এলে আমার শরীরটাকে কেটে ওদেরকে দিয়ে দিবেন। এই সুদখোরদের বিচার আল্লাহ করবে। সুদখোরদের নাম বললাম না কিন্তু তারা সবাই টাকার জন্য আসবে। তখন বুঝতে পারবেন তারা কারা আমি ক্ষমার অযোগ্য তবু ক্ষমা করে দিবেন। এদিকে সুরুজ আত্মহত্যার পর থেকেই হলিধানী এলাকার চিহ্নিত সুদখোররা এলাকা ছেড়েছে বলে পুলিশ জানায়। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, আসামীদের গ্রেফতারে নিয়মিত অভিযান চলছে।