বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তানের খোঁজ না পেয়ে দিসেহারা জন্মদাতা বাবা।সন্তানের বাবা মাসুদ মজুমদার ধারনা করেন যে, মা কর্তৃক সন্তান হত্যা, নাকি অন্যত্র টাকার বিনিময়ে বিক্রি কোনটাই পরিষ্কার করছেন না সন্তানের মা অন্যান্য কারণে এ ধরনের সংবাদ এখন অহরহ।
হায়রে নিয়তি বাবা- মায়ের মতবিরোধ ও মামলা হামলার মত ঘটনার জেরে নবজাতক শিশু কি বলির স্বীকার হলো? এমনই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে বিদ্যুতের মত। সন্তানের বাবা মাসুদ মজুমদার বলেন আমার ঔরস জাত নবজাতক সন্তান কে কি হত্যা করেছে? নাকি অর্থের বিনিময়ে অন্য কাহারো কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। কোনটাই পরিস্কার করছেন না নবজাতকের মা আমার স্ত্রী তানজিনা আক্তার ।
আমার সন্তানের খোঁজ পেতে আমি দিশেহারা হয়ে এধার ওধার ধর্না ধরে হন্যে হয়ে খুঁজতেছি বিভিন্ন স্হানে, কখনো সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার স্থান কুমিল্লা হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, কখনো কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর আমার শশুর বাড়িতে, আবার কখনো শশুর পক্ষের নিকট আত্মীয় স্বজনের বাড়ি বাড়িতে কিন্তু কিছুতেই মিলছেনা আমার সন্তানের খোঁজ,
জানা যায় : হাজিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম হাটিলা গ্রামের মজুমদার বাড়ির আনোয়ার হোসেন মজুমদার এর ছেলে মাসুদ মজুমদার সাথে পার্শ্ববর্তী কচুয়া থানার আশরাফপুর গ্রামের কুমার বাড়ির আইয়ুব আলীর কন্যা তানজিনা আক্তারের সাথে বিগত ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর উভয় পরিবারের সম্মতিতে তিন লক্ষ টাকা কাবিন মূলে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
বিবাহের পর থেকে প্রথম ৩ বছর স্বামী- স্ত্রী ভালোভাবে সংসার করলেও পরবর্তীতে স্ত্রী তানজিনা স্বামী মাসুদের অগচরে বিভিন্ন ছেলেদের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হন বলে জানান স্বামী মাসুদ আলম।
স্বামী মাসুদ মজুমদার আরও বলেন স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয় জানতে পেরে স্ত্রী তানজিনা কে সর্তক করি কিন্তু স্ত্রী তানজিনা তার ভুল নাশুধরিয়ে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে আমার বিরুদ্ধে চাঁদপুর আমলী আদালতে এক কল্প কাহিনী সাজিয়ে আমাকে সহ আমার পরিবারের ৩ জনকে আসামি করে যৌতুক নিরৌধ আইনের ৩ ধারায় ২৪শে জুলাই ২০২২ ইং সালে মামলা নং৩৬১/২০২২ দায়ের করেন।তবে এ বানোয়াট মামলায় তারা আর বেশি দূর এগোতে পারেনি। আমাদের দাম্পত্য জীবনের ফসল ২ বছরের একটি কন্যা সন্তান থাকায়,পরে পারিবারিক ভাবে সন্তানের কথা বিবেচনা করে আমাদের উভয় পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়।
আমরা স্বামী স্ত্রী পুনরায় সংসার শুরু করি। সংসার শুরু করার পর কয়েক মাস ভালো ভাবে সসংসার করলে স্ত্রী তানজিনা পুনরায় গর্ভধারণ করেন।কিন্তু তানজিনা বিভিন্ন লোকের কু পরামর্শে পুনরায় সে তার আগের চরিত্রে ফিরে যায়। স্বামী মাসুদ বলেন কথায় কথায় সে আমার গায়ে হাত তোলেন এ বিষয়ে আমি আমার শ্বশুর-শাশুড়িদের জানালে তারা উল্টো আমাকে শাসায়।
আমাকে ও আমার বাবা মাকে যখন তখন বেফাঁস গালমন্দ করেন এবং কথায় কথায় মামলা ও হামলার ভয়ে দেখান। আমার বাচ্চা বিক্রি করে মামলা চালাবে বলে হুমকি দেন। কিস্তির টাকা নিজ হাতে পরিশোধ করবে বলে একপর্যায়ে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার মত ঘটনায় কাউকে কিছু না বলে কিস্তির টাকা ও বই নিয়ে বাবার বাড়িতে বিগত ১৫ ই জুলাই ২০২৩ইং তারিখে চলে যায়, এবং ২৬শে জুলাই ২০২৩ সনে পুনরায় আমাকে সহ আমার পরিবারের ৫ জনকে আসামি করে চাঁদপুর বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দরখাস্ত মোঃনং৭২৪/২০২৩ দায়ের করে, ওই মামলায় আমি বিনা দোষে জেল খাটি ,জেল থেকে বের হয়ে জানতে পারি আমার স্ত্রী প্রসব বেদনায় কাতর হয়ে কুমিল্লা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এতকিছুর পরেও আমি আমার বাবার থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে আমার দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধের থেকে তাদের একটু সহমর্মিতা পেতে সাথে সাথে আমি ওই হাসপাতালে চলে যাই। হাসপাতালে এসে দেখি আমার একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান হয়েছে এবং নরমাল ডেলিভারি হওয়ায় হাসপাতালের সকলকে আমি মিষ্টিমুখ করাই।
হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ বাবদ আমি আমার শাশুড়ি কাজল রেখার হাতে ১০ হাজার টাকা দেই।আমার শাশুড়ি মা বললেন এই টাকায় হবে না আরো অনেক টাকা লাগবে এমন কথা শুনে আমি শাশুড়ির কাছ থেকে পাঁচশত টাকা ফেরত নিয়ে হাসপাতালের বাকি টাকা জোগাড় করতে বাড়ি চলে আসি।
আরো কিচু টাকা দ্রুত যোগাড় করার পর আমি ওই হাসপাতালে যাই,গিয়ে দেখি যেখানে স্ত্রী, সন্তান, শাশুড়ী কে রেখে গিয়েছিলাম সেখানে ওরা কেহ নেই,ওদের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কে জিজ্ঞেস করলে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের ডাক্তাররা জানান ওনারা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে চলে গেছেন। অনেক খোজা খুজি করলাম হাসপাতালেও নেই শ্বশুরবাড়িতেও নেই আমি হতাশ হয়ে গেলাম।
কোন অবস্থাতেই তাদের সন্ধান পেলাম না। ,কয়ের দিন পরে শশুর বাড়িতে শাশুড়ীর খোজ মিলে,স্ত্রী সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করলে শাশুড়ি বলেন তোর সন্তান মারা গেছে আমি হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে উঠলাম বাড়ির সকলে ভীড় করলো শাশুড়ী তাদের বাড়ির সবাইকে জানায় নবজাতক সন্তান টি মারা গেছে। এ বিষয়ে স্বামি মাসুদ মজুমদার সাংবাদিকদের সাহায্য নিতে আসলে। আমরা সঠিক অনুসন্ধানের স্বার্থে কুমিল্লা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে যাই।
কুমিল্লা হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে তাহারা জানায়,আমাদের হাসপাতালে থেকে নবজাতক শিশুকে জীবিত অবস্হায় সন্তান ও তার মা তানজিনা আক্তার ওরা স্বইচ্ছায় রিলিজ নেয়, এর বাহিরে আমরা কিচ্ছু জানিনা।
বাদী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারুক খানের নিকট দুপক্ষের বিরাজমান মামলার মাঝে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কোন হাসপাতালে ডেলিভারি হয়েছে আমি জানিনা তবে শুনেছি মৃত হয়েছে বা মারা গেছে। আদালতে মামলা চলাকালীন সময়ের মাঝে কারো সন্তান কোথাও কোন কারণে মারা গেলে বিজ্ঞ আদালত কে জ্ঞাতকরণ পূর্বক হয় বাবার বাড়িতে নতুবা মায়ের বাড়িতে কবর দিবে। এ বিষয়ে আপনি কি জানেন এমন প্রশ্নের জবাবে বিজ্ঞ আইনজীবী ফারুক খান বলেন এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
বিবাদী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী এডভোকেট গাজী সাইফুল ইসলাম বলেন কুমিল্লার একটি হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারিতে একটি বাচ্চা হয়েছে। এ বাচ্চা এখন কোথায় আছে এখনো আমরা কনফার্ম না।
এবিষয়ে মাসুদের শাশুড়ী কাজল রেখার বক্তব্য নিতে কচুয়ার আশরাফপুরে তাদের বাড়িতে গেলে সাংবাদিক দেখে তিনি ঘর থেকে পালিয়ে যায়,তবে ওই বাড়ির সকল নারী পুরুষ জানায় তাদের বাড়িতে কোন নবজাতকের লাশ তারা দেখেনি এবং এ বাড়িতে কবরও দেওয়া হয় নাই,
এ বিষয়ে অসহায় পিতা মাসুদ মজুমদারের সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া সন্তান কে ফিরে পেতে প্রশাসন ও গণমাধ্যকর্মি সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন।
উভয়পক্ষের এলাকার সচেতন মহলসহ জনৈক বয়োবৃদ্বা সৃষ্ট ধুম্রজাল নিরসনে আদালতেরও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।