মোঃ নাজমুল হাসান নাজির বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বগুড়া জেলা বিশেষ করে বগুড়ার মূল শহরে প্রবেশের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ফতেহ আলী ব্রিজ ভাঙা ও নতুন ব্রিজ নির্মাণ শুরুর পর থেকেই মহাসংকটে পূর্ববগুড়ার মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় করতোয়া নদী পারাপারে এর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোর সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় সংকট আরও ঘণীভূত হয়েছে।
১৯৭০ সালে নির্মিত ফতেহ আলী ব্রিজকে ২০১৮ সালের আগস্টে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় তিন মাস পর ব্রিজটির ওপর দিয়ে ভারি যান চলাচল বন্ধে উভয়পাশে তিনটি করে ছ’টি পিলার বসানো হয়। দীর্ঘ সময় পর গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজ ভেঙে প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৮ মিটার দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ৩ মিটার চওড়া করে গত বছরের ২২ মে নির্মাণ কাজ শুরু হয়।নির্মাণের শুরু থেকেই ঢিমেতালে কাজ করার অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা। যার প্রমাণ মেলে চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। ব্রিজটি ভাঙার পর পূর্ববগুড়ার মানুষের শহরে প্রবেশের জন্য এপথে কোন বিকল্প পরিকল্পনা ছিল না। পরে ওই এলাকার মানুষের দাবির মুখে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দেয়।এরপর চাপ বাড়ায় আরেকটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। তবে সাঁকো দু’টি হলেও অস্থায়ী সংযোগ সড়ক থাকে ওই একটিই। পূর্ব বগুড়ার তিন উপজেলাসহ ওই অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ বিভিন্ন যানবাহনে চেলোপাড়ায় নেমে হেঁটে বাঁশের সাঁকো দিয়েই মূল শহরে প্রবেশ করেন। মানুষের চলাচলে এতটাই চাপ তৈরি হয় যে, নদীর পূর্বপারে করতোয়া মার্কেটসংলগ্ন রাস্তাটি কয়েক দফা ধসে যায়।কয়েকবার তা সংস্কার করা হলেও এবার গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তা একেবারে ধসে যায়। ধসে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায় মানুষের চলাচল সাময়িক বন্ধ করে দেওয়ায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মানুষের চলাচলের জন্য ধসে যাওয়া জায়গাটি সংস্কার করলেও ঝুঁকি থেকেই গেছে। হাঁটা পথে পাকা স্লাব থাকলেও নিচের মাটি একেবারেই ধসে প্রাণহানির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করে বলেন, সময়মত ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় পূর্ববগুড়ার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। বাঁশের সাঁকো পার হতে হাঁটা পথটিও এখন প্রাণহানির শঙ্কা তৈরি করেছে। এই অঞ্চলের মানুষ দ্রুত ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ ও পায়ে চলাচলের পথটি ঝুঁকিমুক্ত করার দাবি জানান।