কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়ার মিরপুরে সম্পত্তির জন্য মা মমতাজ বেগমকে (৫৪) হত্যার দায়ে ছেলে মুন্না বাবুসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।বুধবার (৫ জুন) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ রুহুল আমীন এ রায় দেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহচর গ্রামের মৃত ফজল বিশ্বাসের ছেলে মুন্না বাবু, মুন্নার বন্ধু ইয়াাছিন আলীর ছেলে রাব্বি ও মুন্নার চাচা মৃত ইনছার বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল কাদের। তারা সবাই কাটদহচর গ্রামের বাসিন্দা।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি মমতাজ বেগম তার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। মমতাজ বেগমের স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি একমাত্র ছেলে মুন্না বাবুর সঙ্গে বসবাস করতেন। তার তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। এ ঘটনার প্রায় একমাস পর ২৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে মুন্নাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এতে নিহতের ছেলে ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততাসহ তার চাচা আব্দুল কাদের ও বন্ধু রাব্বি আলামিনকে এ ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করেন। এরপর সবাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি দুপুরে গলায় রশি পেঁচিয়ে মমতাজ বেগমকে মুন্না, তার বন্ধু রাব্বি ও চাচা আব্দুল কাদের মিলে হত্যা করে। এরপর মরদেহ বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে দেয়। মাকে হত্যার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ২৫ জানুয়ারি অপহরণের জিডি করেছিলেন মুন্না। ছেলে মুন্না জুয়া খেলতেন এবং মাদকাসক্ত। এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে প্রায়ই তার ঝগড়া হতো। সম্পদের লোভে ও টাকা চাওয়া নিয়ে মায়ের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় হত্যা করা হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মিরপুর থানা পুলিশ নিহত মমতাজ বেগমের বস্তাবন্দি গলিত মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই তোরাব আলী বাদী হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল মিরপুর থানার উপপরিদর্শক কায়েশ মিয়া তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, সম্পত্তির লোভে মাকে হত্যার দায়ে ছেলে মুন্নাসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার পরপরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।