আতাউর রহমান তুহিনঃ
খুলনা জেলার কয়রা উপজেলায় ভূমি অফিসকে অনিয়ম, দুর্নীতি রোধের পাশাপাশি ভূমি সংক্রান্ত সেবা সহজ করতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট বি এম তারিক-উজ – জামান নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যেখানে অফিসে এসে প্রথমেই সেবা গ্রহীতারা সরাসরি কথা বলতে পারবেন ভূমি সহকারী কমিশনারের সঙ্গে।২৪ ঘন্টায় নামজারি প্রদান, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাগণদের নামজারি সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ ঘন্টার মধ্যে অনলাইনে দাখিল করার কঠোর নির্দেশনা প্রদানসহ সরকারি ফি’র অতিরিক্ত কোনো অর্থ কাউকে না দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। এসি ল্যান্ডের প্রশংসানীয় উদ্যোগে হয়রানি ছাড়া দ্রুত সেবা পাওয়ায় খুশি গ্রহীতারা। তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
জমির নামজারীর ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত কোর্ট ফি ২০ টাকা, নোটিশ জারী ফি ৫০ টাকা, রেকর্ড সংশোধন ফি ১০০০ টাকা এবং মিউটেশন খতিয়ান ফি ১০০ টাকাসহ সর্বমোট ১১৭০ টাকা। ভূমি অফিসের কেউ অযথা হয়রানি করলে বা অতিরিক্ত অর্থ দাবি করলে সরাসরি বা মোবাইলে জানাতে অনুরোধ করেছেন এসিল্যান্ড বি এম তারিক-উজ- জামান।
ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা একাধিক সুবিধাভোগী বলেন, বর্তমানে এ অফিসে সেবা পেতে বর্তমানে কোন মাধ্যম প্রয়োজন হয়না। ভূমি অফিসের আগের তুলনায় অনেক দালালের দৌরাত্ম্য কমে গেছে, ভোগান্তি ছাড়াই সেবা পাওয়া যাচ্ছে। নামজারি পেতে ও অতিরিক্ত অর্থ না দেওয়ার পাশাপাশি হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে না।
প্রায় ৪ বছর ধরে নিজের জমি সংক্রান্ত নানা কাজে কয়রা উপজেলা ভূমি অফিসে আসেন বাগালী ইউনিয়নের শরিষামুট গ্রামের জাহিদুল । বিভিন্ন সময় নানা হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। গেল কয়েক মাসে তা কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আজকের পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। সমস্যা নিয়ে সরাসরি কথা বলেছেন এসিল্যান্ডের সঙ্গে। তিনি একদিনে তার শরিষামুট মৌজার জমির নামজারি করতে পেরেছেন বলে জানান।
ভিন্ন অভিজ্ঞতায় কথা জানালেন আমেনা বেগমও। বললেন, এখানে আসার ৩০ মিনিটের মধ্যে জমির নামজারি কাগজপত্র পেয়ে গেছেন কোন ভোগান্তি বা অতিরিক্ত অর্থ ছাড়াই। তিনি আগে বিভিন্ন সময় অনেক ভোগান্তির স্বিকার হয়েছেন বলেও জানান।
ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হাদিছুর রহমান বলেন, মানুষ এখন ভূমি অফিসে এসে কোনো হয়রানির শিকার হয় না। সাধ্যমত চেষ্টা করা হয় মানুষকে সেবা দেওয়ার।
খুলনা কয়রা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট বি এম তারিক উজ – জামান বলেন, যার কাজ তাকেই সরাসরি আমার অফিসে আসতে উৎসাহ দিচ্ছি। অন্য কারো হাত দিয়ে আসা মানেই সেখানে মধ্যস্ততাকারী( দালাল) ঢুকে পড়া.। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনার লক্ষ্যে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের ২৪ ঘন্টার ভিতর নামজারী সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন অনলাইনে দাখিল করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এতে করে মধ্যস্ততা কারীদের (দালাল) দৌরাত্ম্য যেমন কমে আসবে, তেমনি অল্প সময়ের মধ্যে সেবা পাবে ভূমি অফিসে আসা সাধারণ মানুষজন।তিনি আরও বলেন, মধ্যস্ততাকারী সবসময় অপপ্রচার করে যে টাকা ছাড়া কাজ হয় না ফাইল আটকে থাকে। এই অপপ্রচার না করলে তাদের অবৈধ আয় বন্ধ হয়ে যাবে।ভূমি অফিসে আসা সকল সেবাগ্রহীতার জন্য জনবান্ধব সেবা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। একজন মানুষও যাতে ভোগান্তির শিকার না হয় সেজন্য আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি।