শহিদুল ইসলাম নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
জুয়েল সাদত ওয়াশিংটন আমেরিকা।
ওয়াশিংটন ফোবানা সব সময় ভাল হয়। এবারেও ফোবানা তার অতীত রেকর্ড কে ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান ৩৮ তম ফোবানার হোস্ট বাগডিসির কর্মকর্তারা।
ফোবানা কয়টা এটা বড় বিষয় না, মুল ফোবানা কোনটা সেটাই। এটর্নী মোহাম্মদ আলমগীরের ফোবানাই ৩৮ তম ফোবানা।যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনে ২৫টিরও বেশি অঙ্গরাজ্য থেকে ৮৬টি সংগঠনের অংশগ্রহণ করছেন। নতুন করে ২৬টি সংগঠন যোগ দিচ্ছেন এ সম্মেলনে যা গত ৩৭ বছরে কখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনের আহবায়ক রোকসানা পারভীন। গত শনিবার (৩ আগস্ট) নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসির ভার্জিনিয়ায় লেবার ডে উইকেন্ডে ৩০-৩১ আগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর ভার্জিনিয়া আর্লিংটনের ক্রিস্টাল গেটওয়ে ম্যারিয়টে অনুষ্ঠিত হবে ৩৮তম ফোবানা সম্মেলন। এবারের সম্মেলনে সফল ও সার্থক করেতে আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি’র শতাধিক কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী দিনরাত কাজ করছেন বলেও উল্লেখ করেন আহবায়ক রোকসানা পারভীন।
তিনি বলেন, পূরো উদ্যমে ওয়াশিংটনের সম্মেলনের প্রস্তুতি পর্ব এগিয়ে চলছে। ৩৫টি সাব-কমিটিতে সম্পৃক্ত শতাধিককর্মী এই প্রস্তুতি পর্বের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, আর বিশেষভাবে উল্লেখ্য আমাদের ফোবানার কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ফোবানার সকল নেতৃবৃন্দ আমাদের এই সম্মেলন আয়োজনে অকুন্ঠ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন একটি সফল সম্মেলন উপহার দেয়ার জন্য। এ জন্য হোস্ট কমিটির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
লিখিত বক্তব্যে রোকসানা পারভীন জানান, এবারের সম্মেলনে থাকছে-গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে থাকছে সাহিত্য, কারিগরি শিক্ষা এবং এর প্রভাব ও উন্নয়ন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও সাইবার সিকিউরিটি, নারীর ক্ষমতায়ন, যুব উন্নয়ন, মূলধারায় আমাদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের বিকাশ, ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকার বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, আরবান ডেভেলপমেন্ট, ন্যানো টেকনোলজির এবং এর কার্যকারিতা, স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে এআই এর প্রভাব, তরুণ মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের অনুপ্রাণিত করার জন্য স্কলাশিপ অ্যাওয়ার্ড, তরুণ প্রজন্মকে আমাদের সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত করার প্রয়াসে তাদের অংশগ্রহণে সংগীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতা, বৃহত্তর পরিমণ্ডলে নারীর ক্ষমতায়ন বা ভূমিকা, অর্জন এবং তাৎপর্যের উপর আলোকপাত করার জন্য তাদের ক্ষমতায়নের উপর আলোচনা ও আলোকপাত। সেজে উঠেব কারুপণ্য শিল্পের প্রদর্শনী দিয়ে, যেখানে থাকবে আমাদের ঐতিহ্যবাহী কারুপণ্যের বাহার, অনন্য আয়োজনে তরুণদের অংশগ্রহণে থাকবে বর্ণীল ফ্যাশন শো, সাহিত্যের উপর আলোকপাত এবং কাব্য জলসা, সকল বাঙালিদের বইয়ের প্রতি, বই পড়ার প্রতি উৎসাহিত করার জন্য ফোবানা গ্রন্থমেলা, যুব ফোরাম ও নেটওয়ার্কিং, ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকার বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, এনআরবি ব্যবসায়ী এবং ব্যবসা উদ্যোক্তাদের, নেটওয়ার্কিং, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এলামনাই ফোরাম এর আলোচনা, আন্তঃধর্মীয় শান্তি আলোচনা, বাংলাদেশের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শিনী ইত্যাদি। গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারের জন্য ১৫টি অ্যাবস্ট্রাক্ট ইতিমধ্যে জমা পড়েছে এবং সেমিনারের প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। এগিয়ে চলছে কাব্য জলসার প্রস্তুতি, প্রায় ২০জন স্বনামধন্য কবি এই পর্বে অংশগ্রহণ করবেন। স্বদেশ শৈলী প্রকাশনার তত্ত্বাবধানে উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের কবিদের প্রায় ৫০টিরও বেশি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হবে একটি কাব্যসঙ্কলন ‘কাব্যলোকে।
ফোবানার বিশেষ সংকলনের প্রকাশনা-“চেতনায় বাংলাদেশ”, বিভিন্ন স্বনামধন্য লেখকদের লেখার সমন্বয়ে সেজে উঠছে এই বিশেষ সংকলন, এগিয়ে চলছে আমাদের প্রকাশনার কাজও। নৃত্য ও সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে প্রায় ৪০ জন তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এবং মূলমঞ্চে বিজয়ীদের সম্মানিত করা হবে। বিজ্ঞানমেলায় সম্পৃক্ত হচ্ছে প্রায় ২০-২৫ জন তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। বিজনেস নেটওয়ার্কিং-এ যোগ দিচ্ছেন ১৫০ জনেরও বেশি এনআরবি ব্যবসায়ী এবং ব্যবসা উদ্যোক্তা। এটি ফোবানা সম্মেলনের আরেকটি বিশেষ অনুষ্ঠান। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান আমাদের যুব ফোরাম, যেখানে যোগ দিচ্ছে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী, যাদের মাঝে গড়ে উঠবে একটি চমৎকার সেতুবন্ধন, আর ওদের হাত ধরেই বেঁচে থাকবে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য।
এছাড়াও রয়েছে Fobana Rally সহ আরো অনেক আয়োজন, যা আপনাদের পুরো তিনটি দিনকে করে তুলবে আনন্দময়। সম্মেলনের পাশাপাশি রয়েছে দেশের রাজধানী শহর ওয়াশিংটনের বিভিন্ন আকর্ষণ, পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর এক অনন্য সুযোগ। সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন বেশ কিছু মূলধারার নেতৃবৃন্দ এবং বিশেষ ব্যক্তিত্ববৃন্দ, যাদের অংশগ্রহণে অলংকৃত হবে আমাদের ফোবানার মিলনমেলা। ফোবানা সম্মেলনে প্রবাসীদের সাদর আমন্ত্রণ জানান তিনি।
ফোবানার চেয়ারপারসন এটর্নি মোহাম্মদ আলমগীর ও এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারী আবীর আলমগীর বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতে আমরা ৩৮তম ফোবানা সম্মেলন পিছিয়ে দিতাম কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ দুই বছরের প্রস্তুতি এবং সাংবিধানিক সমস্যা রয়েছে। এ সম্মেলনে নির্ধারন করা হবে গত বছর ঘোষিত আগামী বছরের ফোবানা সম্মেলনের নতুন চেয়ারপারসন ও এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারী। দেশের চলমান ঘটনা তথা কোটা আন্দোলনে সকল হতাহতের প্রতি আমাদের সম্মান ও সহমর্মিতা অব্যাহত থাকবে।
ফোবানা নেতৃবৃন্দদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফোবানার চেয়ারপারসন এটর্নি মোহাম্মদ আলমগীর ও এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারী আবীর আলমগীর, সাবেক চেয়ারপারসন রবিউল করিম বেলাল, রেহান রেজা, ফোবানার সাবেক কর্মকর্তা এম রহমান জহির, ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনের সদস্য সচিব আবু রুমি।