মোঃ নুরনবী ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
অবৈধভাবে নিজ গুদামঘরে টিসিবি পণ্য রাখার দায়ে টিসিবির ডিলারকে আটক করে ১ মাসের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (৩০শে জুলাই) রাত সাড়ে ১০ টার সময় স্থানীয় সাংবাদিকদের সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার শিমুলতলী বাজারের একটি গুদামঘরে অভিযান চালিয়ে টিসিবি পণ্য উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন এবং রাত সাড়ে ১২ টার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতে টিসিবির ডিলারকে সাজা দেয়।
উপজেলার বোয়ালধার গ্রামের মৃত ইসাহাক আলীর ছেলে একরামুল হক (৪০) কে অবৈধভাবে নিজ গুদামে টিসিবির পণ্য রাখার দায়ে ১ মাসের সাজা দেয় উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা।
ডিলার একরামুল হক জানান, আমি আমার গুদামঘর বোয়ালধার গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানাকে ভাড়া দিয়েছি।গুদামে টিসিবির পণ্য আছে সে বিষয়ে আমি জানিনা। সাংবাদিকরা তাঁর কাছে গুদামঘর ভাড়ার প্রমাণপত্র দেখতে চাইলে সে প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়।
স্থানীয়রা জানান, যখন থেকে টিসিবির পণ্য দিচ্ছে তখন থেকেই একরামুল ও মাসুদ দুজনে মিলে প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে গাড়িতে করে টিসিবির মাল নিয়ে আসে গুদামঘরে মজুদ রাখে এবং পরে বিভিন্ন বাজারের দোকানদারদের কাছে এগুলো বিক্রি করে।অসহায়দের টিসিবি পণ্য এভাবে মেরে খাচ্ছে এরা। আমরা একরামুল ও মাসুদ সহ তাঁদের সাথে জড়িত সকলের সর্ব্বোচ্চ শাস্তি ও ডিলারশিপ বাতিলের দাবী জানাচ্ছি।
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, একরামুল ও মাসুদ রানা দুজনে মিলে ডিলারদের কাছে অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে প্রায় ২০০ জন ভুক্তভোগীর কার্ড হাতিয়ে নিয়ে টিসিবির পণ্য উত্তোলন করে, পরে তাঁরা সেটা বিক্রি করে বলে আমরা জানতে পারি। আজ রাতে তাঁদের গুদামঘরে টিসিবির পণ্য নিয়ে আসে রাখলে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি এবং উপজেলা প্রশাসন কে জানায়।
তাঁরা আরও বলেন, একরামুল হক একজন টিসিবির ডিলার, তবুও সে প্রত্যেক ইউনিয়নে সিন্ডিকেট তৈরি করে তাঁর সহযোগী মাসুদ রানাকে নিয়ে অবৈধভাবে অসহায় মানুষদের পণ্যে ভাগ বসায়। আমরা তাঁর ডিলারশিপ বাতিলসহ তাঁর সাথে যারা জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থার অনুরোধ জানাচ্ছি।
উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, তাঁর গুদাম ঘরে প্রায় ৫০০ লিটারের উপরের তেল, ৫০০ কেজির উপরে চাল ও সাড়ে ৩০০ কেজির উপরে মশুর ডাল উদ্ধার করি। অপরাধী তাঁর অপরাধ শিকার করায় তাঁকে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় ১ মাসের সাজা দিয়েছি। সাংবাদিকরা তাঁর সহযোগী মাসুদ রানার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে পলাতক থাকলেও তাঁকে খুজে বের করে তাঁর বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা কাওসার বলেন, স্থানীয় সাংবাদিকদের সংবাদের ভিত্তিতে একরামুলের গুদামঘরে অভিযান চালিয়ে টিসিবির পণ্য উদ্ধার করি।টিসিবির বিষয়ে আমরা কাউকে ছাড় দিব না। তাঁর মাল জব্দ করে আমরা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিব। তাঁর নিজের অপরাধ স্বীকার করায় তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১ মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। জনগণের স্বার্থে এমন অভিযান চলমান থাকবে।