মোঃ আলাউদ্দীন মন্ডল রাজশাহীঃ
এক সন্তসনের জনক উজ্জ্বল সরকার (৩৭)। তিনি সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) তে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে বেশ ভালোই কাঠছিল সংসার। কিন্তুু হঠাৎ তার বিশেষ প্রয়োজন পড়ে কিছু টাকার। কোন ভাবে এ টাকার ব্যাবস্থা করতে না পেরে ইমরান হোসেন বাবু নামের এক সুদ কারবারির সরনাপন্ন হন তিনি। গত ৯ মাস আগে তার কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা নেন সুদে। এ টাকা আদায়ের জন্য সুদ কারবারি চাপ দিতে থাকে। এ সুত্র ধরে গত শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উজ্জ্বল তার তিন বছর বয়সী মেয়ে উম্মে সাইমাকে নিয়ে তার শশুর বাড়ি বাউসা মাঝপাড়া যাওয়ার পথে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা আঁখ সেন্টার সংলগ্ন পুকুর পাড় নামক স্থানে উপস্থিত হলে মোটর সাইকেলের গতি রোধ করে সুদ কারবারী ইমরান হোসেন বাবু (৩২) ও তার দুলাভাই জহুরুল ইসলাম (৪০) সহ আরও ৩ জন। সেখানে তাকে মারপিট করে কেড়ে নেওয়া হয় তার ব্যাবহৃত রাজশাহী -হ ১৪-১০২২ নম্বরের মোটর গাড়িটি। সে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রামকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সেখানেই মৃত্যু বরণ করেন। তার এই অকাল মৃত্যুতে পরিবারে বইছে শোকের মাতম।
সরেজমিনে জানা যায়, উজ্জ্বল টাকা পরিশোধের জন্য সময় চেয়েও পার পায়নি মোটর গাড়িটি কেড়ে নিয়েছে সুদ কারবারি বাবু। গাড়িটি স্টার্ট করতে না পেরে বাবু দিঘা বাজারের হালিম মটরসে নিয়ে যায় এবং সেখানে রেখে চলে যায়। বর্তমানে গাড়িটি সেখানেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন হালিম। নিহতের পরিবারের দাবী গাড়ী কেড়ে নেওয়ার সময় উজ্জ্বল কে মারধর করা হয়েছে এবং এ কারনেই তিনি মৃত্যু বরণ করেছে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সুদে কারবারি ইমরান হোসেন বাবুর বাড়ি নাটোর জেলার বাগাতিপাড়ার প্রতাফপুর সীমানায় হলেও সে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ভোটার। আজ থেকে কয়েক বছর আগেও তার তেমন কিছুই ছিলো না। সে সুদের ব্যাবসা করে এখন অনেক টাকা পয়সার মালিক বনে গেছে। তার অত্যাচারে এখন অতিষ্ট এলাকাবাসী।
গোপন সুত্রে জানা যায়, বছর দুই আগে দিঘা এলাকার এক ব্যাক্তি এই সুুদ কারবারি বাবুর কাছ থেকে চওড়া সুদে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। কিছুদিন পরেই ওই লোকটি স্ট্রোক করে মারা যায়। পরে সেই দেড় লক্ষ টাকার দরুন ১৮ মাস যাবৎ ১ বিঘা জমি ভোগ দখলে নিয়েছেন সুদে কারবারি বাবু।
নিহতের স্ত্রী জানান, বাগাতিপাড়া আর বাঘা থানার ঠেলাঠেলিতে কোন পুলিশ আসেনি তার বাড়িতে। উপায়ান্তর না পেয়ে তার স্বামীর লাশ গতকাল বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে দাফন করা হয়েছে। তবে তিনি পুলিশের প্রতি আস্থা রেখে বলেছেন, আমার চাচাতো দেবর আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে বাঘা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত সুদে কারবারি বাবু বাড়িতে নেই জেনে তার দিঘা বাজারের দোকানে গেলে বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়াও তার ব্যাবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে পোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সবুজ রানা জানান, গাড়ী কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।