মোঃ আরিফুর রহমান মামুন পটুয়াখালীঃ
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নে বৃদ্ধা মা ও ভাইদের উপর হামলার অভিযোগ এক সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা নারী। শনিবার বিকেল ৪টায় মোসাঃ সমের্তবান নামের এক বৃদ্ধা নারী দুমকি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ তুলে ধরেন। ওই বৃদ্ধা মহিলার বাড়ি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ঝাটরা গ্রামে। তিনি মৃত. আব্দুল বারেক সিকদারের স্ত্রী।
বৃদ্ধা নারী মোসাঃ সমের্তবান লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, ২০১০ সালে আমার স্বামী আব্দুল বারেক সিকদার মারা যাওয়ার পর থেকে বহু কষ্টে সন্তানদের আগলে রেখেছি। অনেক কষ্ট-ক্লেশ করে ৫ ছেলে ও ১ মেয়েকে মানুষ করেছি। আমার বড় ছেলে মোঃ সেলিম সিকদার ছোটবেলা থেকেই দুষ্ট ও বেয়াদব প্রকৃতির। তার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিদেশে (সৌদি) পাঠিয়ে দিয়েছি। ওখানে গিয়েও মারপিট করে জেল পর্যন্ত খেটেছে। আমরা খবর পেয়ে জায়গা-জমি বিক্রি করে তাকে মুক্ত করার জন্য সৌদিতে অনেক টাকা-পয়সা পাঠিয়েছি। বড় ছেলে মোঃ সেলিম সিকদার ২০ বছরেরও বেশি সময় সৌদিতে ছিল। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ছোট ছেলে আশিকুর রহমানের জমি বিক্রি করে তাকে ৭০ হাজার টাকা পাঠাই। পরে সে দেশে চলে আসে। ২০২১ সালে আঙ্গারিয়া ইউপি নির্বাচনে ৫নং ওয়ার্ড থেকে সেলিম সিকদার মেম্বার পদে নির্বাচন করে। তার নিজের কবলাকৃত জমি, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রি করে নির্বাচন করে। কিন্তু নির্বাচনে হেরে যায়। এরপর অর্থনৈতিকভাবে সে দূর্বল হয়ে যাওয়ায় সেলিম সিকদার এর বসতবাড়িতে অবস্থিত ৪০ শতাংশ জমির মধ্যে আমার নিজনামীয় ১৭ শতাংশ জমি বিক্রি করার পায়তারা চালাচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন ধরনের চাপ দেয়া, হামলা, নির্যাতন ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসছে। আমি ওই বাড়িতে ছিলাম কিন্তু তার অব্যাহত হামলা, নির্যাতনের ভয়ে ছোট ছেলে মোঃ আশিকুর রহমান ও মোঃ সুমন সিকদারের কাছে চলে যাই এবং বর্তমানে কয়েক বছর যাবৎ তাদের সঙ্গে থাকি। আমাকে আমার বড় সন্তান সেলিম সিকদারের নেতৃত্বে তার স্ত্রী নাছিমা বেগম ও পুত্র নুরে আলম সিকদার সেখানে গিয়েও কয়েকবার হামলা চালিয়ে নির্যাতন করে। আমি এই ঘটনা আমার ভাই, বোন, বাড়ির মানুষ এবং এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানাই। কিন্তু সেলিম বেয়াদব ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির হওয়ায় কেউই তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। এ ঘটনার কোন বিচার আজও পর্যন্ত পাইনি। আমি একজন সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা মানুষ। আমার চলতে-ফিরতে খুব কষ্ট হয়। তাও আমার উপর নির্যাতন চালায়। সে আমার খোঁজখবর নেয়না এবং টাকা-পয়সা দেয়না। আমি ছোট ছেলে মোঃ আশিকুর রহমান ও মোঃ সুমন সিকদারের কাছে থাকায় তাদেরকেও গত ২১/১১/২০২৩ তারিখে দুপুর ১২ টার দিকে আমাদের নিজ বাড়িতে এসে আমি ও আমার দুই ছেলের উপর বড় ছেলে সেলিমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে আমি ও আশিক গুরুতর আহত হয়ে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। বাড়িতে আসার পর বড় ছেলে সেলিম উল্টো আমার দুই ছেলে সুমন ও আশিক, পুত্রবধু খুশি বেগমসহ ৫ জনকে আসামী করে থানায় মিথ্যে মামলা দিয়ে ২ ছেলেকে জেল খাটিয়েছে। আমি এর কোন ন্যায্য বিচার পাইনি। আর কোন উপায়ন্তর না পেয়ে পটুয়াখালী কোর্টে ২৯/১১/২০২৩ তারিখে মামলা দায়ের করেছি। বিজ্ঞ আদালত তার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছে। কিন্তু সে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে এবং আমি, আমার ৪ ছেলে এবং মামলার স্বাক্ষীগণকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট এর সুষ্ঠু ও ন্যায্য বিচার প্রার্থনা করছি। দুমকি প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ, জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সকল সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।