নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
দরিদ্র ও অসহায় শীতার্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করলো ইগনাইট গ্লোবাল ফাউন্ডেশন। এ বছর ৩ হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নে গোবিন্দিয়া গ্রামে স্কুল এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি পর্যায়ক্রমে ছোট থেকে বড় অসংখ্য প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করেছে এবং বর্তমানেও তাদের বিভিন্ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন, নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসেবা, রক্তদান, তরুণ সমাজের উন্নয়ন, মানবাধিকার, পরিবেশ সুরক্ষা সহ বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয় তাদের কাজের আওতাধীন।
বিগত সাত বছরে ইগনাইট গ্লোবাল ফাউন্ডেশন দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী ৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮২০ টি পরিবারকে সহায়তা করেছে, ১টি স্কুলের মাধ্যমে ১৫৫ টি সুবিধাবঞ্চিত শিশুর বিনামূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, ১৫৮ টি পরিবারকে স্বাবলম্বী করেছে। সংকটাপন্ন অবস্থায় প্রায় ৩,৬৪০ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করেছে। এছাড়াও প্রায় ৫৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ পানি সেবার আওতায় এনেছে। ১ হাজা ৫৫ জন নারীকে পুনরায় ব্যাবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ করেছে। প্রায় ২০ হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুর পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করেছে। “প্রজেক্ট নির্মাণ” এর মাধ্যমে দুর্যোগ কবলিত ৩৩ বাড়ি এবং ১ টি মসজিদ পুনঃ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। ইগনাইট মেডিকেল টিম ৬ হাজার ৫৪০ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন বিষয়ের ২৫ শ’ বইয়ের সমন্বয়ে একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছে।
২০১৬ সালের ছোট্ট ইগনাইট গ্লোবাল ফাউন্ডেশন ক্রমে ক্রমে পরিণত হয়েছে বিশাল এক পরিবারে। বর্তমানে প্রায় ২৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সমগ্র বাংলাদেশের আনাচে কানাচে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিটি উদ্যোগকে সফলভাবে সম্পন্ন করতে। পাশাপাশি প্রায় ৫ হাজার স্কুলগামী শিক্ষার্থী কাজ করছে পরিবেশ সুরক্ষা প্রজেক্টে।
উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির সময়োপযোগী বিশেষ কিছু কর্মসূচী রয়েছে। করোনা মহামারীকালে প্রতিষ্ঠানটি ৪০ হাজার মানুষের এক মাসের খাদ্যের যোগান দিয়েছিল। ৩হাজার ৫ শত, মানুষকে অনলাইন স্বাস্থসেবা প্রদান করেছিল। এরপর, ২০২২ সালে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে ঈদুল আজহায় সিলেট অঞ্চলে ২০০০ প্যাকেট গরুর মাংস বিতরণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসে ইগনাইট গ্লোবাল ফাউন্ডেশন ইফতার এবং সেহরি বিতরণ কার্যক্রম থেকে আরম্ভ করে যাকাতের অর্থ সংগ্রহ করে দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী যাকাত অর্থ দিয়ে দরিদ্র মানুষের মাঝে কেবল শাড়ি, লুঙ্গি বিতরণ না করে উক্ত অর্থে দরিদ্র পরিবারগুলোকে স্বাবলম্বী করে তোলাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। সুদূরপ্রসারী চিন্তা দ্বারা সেলাই মেশিন, রিক্সা, ভ্যান, গবাদি পশু কিনে দিয়ে কিংবা মুদি দোকান নির্মাণ করে দিয়ে ইগনাইট গ্লোবাল ফাউন্ডেশন বদলে দিয়েছে বহু পরিবারের জীবনযাত্রার মান, কাঁধে নিয়েছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য রক্ষার ভার।
ইগনাইট গ্লোবাল ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ জহিরুল ইসলাম তার এই মহৎ উদ্যোগের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন। তার মাঝে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি –
The Diana Award 2020
Joy Bangla Youth Award 2020
UN Best Volunteer Group Award 2019
The Hero Award 2021
The Unswerving Contribution Award 2022
JCI Young Entrepreneur Award 2022
The President Scout Award 2013.
এছাড়াও তিনি সময় পেলেই তরুণ সমাজের প্রতি অনুপ্রেরণা মূলক বক্তব্য রাখেন, যেখানে তিনি তরুণ প্রজন্মকে দেশের কথা ভাবতে, জাতি গঠনে সচেষ্ট হতে, সমাজের কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন।মোঃ জহিরুল ইসলাম স্বপ্ন দেখেন দারিদ্র্য মুক্ত, শিক্ষার আলোয় আলোকিত স্বনির্ভর এক বাংলাদেশের, যেখানে সকল মানুষের মানবাধিকার থাকবে সুরক্ষিত।
তিনি দেশ গঠনের এই অগ্রযাত্রায় নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যেতে চান।