আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারে না। বিদেশিরা আমাদের শুধুমাত্র বন্ধু হতে পারে, ক্ষমতা রাখার মালিক দেশের জনগণ।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের সম্পাদকম-লীর সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের জনগণ না চাইলে কি আমরা জোর করে ক্ষমতায় থাকবো? জোর করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। আর কোন বিদেশী শক্তি ও কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারেনা। বিদেশীরা আমাদের শুধুমাত্র বন্ধু হতে পারে, ক্ষমতা রাখা না রাখার মালিক বাংলাদেশের জনগণ।
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের ভারত সফর নিয়ে বিএনপির নানা অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ভারত কি আমাদের ক্ষমতায় বসাবে? ৭৫ এর পরবর্তী সময়েও তারা আমাদের কোন বিষয় নিয়ে হস্তক্ষেপ করেনি। ২০০১ সালে আমরা হেরে গেছি। ভারত কি আমাদের জেতাতে চেয়েছে? তারা তো তখন কোন হস্তক্ষেপ করেনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত একটি গণতন্ত্রের দেশ। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোন কথা হয়নি। এই সফর ছিলো পার্টি টু পার্টির। আমাদের যতোটুকু বলতে হয় বলেছি। কিন্তু মোদি সাহেব নির্বাচন নিয়ে কিছুই বলেননি। আমরা আমাদের সম্পর্ক আরো কিভাবে ভাল করা যায় সেই সব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের জাতীয় স্বার্থে ভারতে যখন যে সরকারই আসবে তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে বলেও মনে করে মন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্তরিক পরিবেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে ৩২ মিনিটের মতো আলোচনা হয়েছে। আমরা দেশের জনগণের স্বার্থকেই সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছি। মোদি সাহেব আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন।
তিনি বলেন, ভারতের জনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবকে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমরা আশা করছি তাদের সিনিয়র নেতারা বাংলাদেশ সফরে আসবেন।
কাদের বলেন, আমরা তিস্তা চুক্তি, রোহিঙ্গা কোনটাই বাদ দেইনি। দেশের স্বার্থে এসব কথা তুলে ধরেছি। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি আমাদের সীমান্তকে কোন সন্ত্রাসীককে ব্যবহার করতে দিব না। এ বিষয়টি ভালো করে তুলে ধরেছি। তিস্তার পানির জন্য আমাদের দেশে প্রচুর মানুষের হা হা কার আছে। এ অবস্থায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, তিস্তা চুক্তি যদি হয় তা আমাদের দেশের জনগণের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশে আসলেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তখন তাদের দায়িত্ব বন্টন করে দেয়া হবে। আমরা গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছি। এখানে আমরা স্পষ্ট করে বলেছি এই দুই এলাকার যারা ঢাকায় আছেন তারাই শুধু নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নেবেন। অন্য এলাকার কোন লোক ওই সব এলাকায় যাবেন না। যেন কোনো প্রকারে আচরণবিধি লঙ্ঘন না হয়। এছাড়া যেন ওইসব এলাকার জনমনে কোন বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়।
তিনি বলেন, গাজীপুর এবং খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও কমিশনার স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করবে। এখন সরকার যা যা করা দরকার তাই করবে। নির্বাচন কমিশনারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও মহিবুল হাসান চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।