বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ১ম পর্ব।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের সকল কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তৈরী হয়েছে রেজা সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট নানাবিধ কাজ করে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, চেক জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে চাকরি নেওয়া ও দেওয়া, ঘুষের মাধ্যমে পদোন্নতি গণপূর্তের বাসা বরাদ্দ দেওয়ার নামে ঘুষ গ্রহণ, বরাদ্দকৃত বাসা বহিরাগতদের ভাড়া দিয়ে বানিজ্য, আর বদলি বাণিজ্যতো আছেই। তিনি সরকারি চাকরি করা সত্ত্বেও ঠিকাদারি লাইসেন্স করে ঠিকাদারি বাণিজ্য নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন। সরেজমিনে জানা যায় পাঁচ শ্রমিকনেতা মিলে এই সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন, এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা রেজাউল করিম রেজা ছাড়াও রয়েছেন আরো ৪ সদস্য, তারা হলেন, আফসার উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, মোরশেদুল আলম সোহাগ ও সাখাওয়াত।
রেজা সিন্ডিকেটের দুর্নীতি চিত্র অনুসন্ধানে উঠে আসে গণপূর্ত অধিদপ্তরে হিসাব সহকারী পদে কাজ করেন রেজাউল করিম রেজা। গত ২৪/০৮/২০২৩ ইং তারিখ দৈনিক ভিত্তিক কর্মচারীদের আবেদনে জানা যায় রেজা তাদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন, তৎসঙ্গে গণপূর্ত শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসে ২০থেকে ৩০জন প্রতিদিন খাবার খায়। সেই বাজারের খরচ দৈনিক ভিত্তিক কর্মচারীদের কাছ থেকে নিতেন রেজা। গণপূর্ত বিভাগ- ৪ এ কর্মরত থাকাকালীন চেক জালিয়াতি করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেন রেজাউল করিম রেজা। ঐ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী শংকর কুমার মালু তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেন এবং সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে তিন মাস সাসপেন্ডসহ বদলি করা হয়। কিন্তু রেজার ক্ষমতার কাছে গণপূর্ত যেন অসহায়। তাই দাপটের সহিত রেজাউল করিম রেজা গণপূর্ত অধিদপ্তরকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজত্ব করে যাচ্ছেন।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ১০৭৭ জন কার্যভিত্তিক কর্মচারীদের নিয়মিত করণের বিষয়ে রেজাউল করিম রেজা (সভাপতি গণপূর্ত শ্রমিক ইউনিয়ন) ১,৬৮,০০,০০০ (১ কোটি ৬৮ লক্ষ) টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেন মর্মে তার সহযোগী ক্যাশ সরকার আনোয়ার হোসেন গণপূর্ত বিভাগ-৩ বিভিন্ন দপ্তরে রেজার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এদিকে কার্যভিত্তিক কর্মচারীদের মধ্যে ১৭৯ জনকে নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে আনয়ন করার জন্য আদালত রায় দেয়। রেজা এই কর্মচারীদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে প্রতি জনে ২০,০০০টাকা করে মোট ৩৫,৮০,০০০টাকা আদায়ের পর তা আত্মসাৎ করেন বলে জানা যায় সুষ্ঠু তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে বলে জানায় গণপূর্ত অধিদফতরের একাধিক কর্মচারি। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বিভিন্ন দপ্তরের বদলির হুমকি দেয় এবং বদলি করে প্রত্যেকের নিকট থেকে লক্ষ টাকা আদায় করেন তিনি।
রেজাউল করিম রেজা গণপূর্ত অধিদপ্তরের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি হওয়ার পূর্বে ২৬ ডিসেম্বর২০১৬ মোখলেসুর রহমান ও মোরশেদুল আলম সোহাগকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলিফ্যান্ট রোডে বর্বরোচিত হামলা করে রেজা ও তার বাহিনী। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে শাহবাগ থানায় ২৭শে ডিসেম্বর ২০১৬ইং তারিখ মামলা হয়। মামলা নং -১৩/১৯৬ তাতে একনম্বর আসামী করা হয় রেজাউল করিম রেজাকে
তৎকালীন সময়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন বিভিন্ন ব্যানার পোস্টার বানিয়ে তার বিচার দাবি করেছেন। বিভিন্ন পত্রিকায় খবরটি প্রচারিত হলেও রেজাউল করিম রেজার ক্ষমতায় সে মামলা আর আলোর মুখ দেখেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণপূর্ত শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্য বলেন, রেজা অনেক অন্যায় করেছে অনেক অপরাধ করেছে কিন্তু কোন বিচার হয়নি । এবারও হবে না কারণ গণপূর্ত অধিদপ্তর তার ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে রাখে।