বগুড়া

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আয়া পদ ফিরে পেতে সাংবাদিক সম্মেলন

মোঃ নাজমুল হাসান বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আয়া পদ ফিরে পেতে মঙ্গলবার সকালে বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মোছা: শাহীন আরা। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, আয়া পদে শজিমেক হাসপাতাল বগুড়ায় কর্মরত থাকা অবস্থায় আমার স্বামী আব্দুর রশীদকে ব্যক্তিগত কারনে তালাক প্রদান করায় আমার পিতার সহিত মনোমালিন্য হলে তিনি আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এই সুযোগে আমার প্রথম স্বামী আমার পিতাকে মিথ্যা প্ররোচনায় প্রতি হিংসা বশত আমার বিরুদ্ধে আমার কর্মস্থলে অভিযোগ দায়ের করেন। একটি সময়ে আমি সরকারি চাকুরি হইতে সাময়িক বরখাস্ত হই। এমতাবস্থায় আমি হাইকোর্টে রিট পিটিশন করিলে দীর্ঘদিন মামলা চলমান থাকার পর আমি সরকারি চাকুরিতে পুন:বহাল হইবার রায় পাই। উক্ত রায়ের কপিসহ আমার কর্মস্থল শজিমেক হাসপাতালে যোগদান দাখিল করিলে মো: তোফাজ্জল হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) আমার যোগদানে বাধার সৃষ্টি করে সু- কৌশলে আমার নিকট মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। উল্লেখ্য যে, মো: তোফাজ্জল হোসেন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ২০০৬ইং সালে অত্র হাসপাতালে সর্বকনিষ্ঠ মতে নিয়োগপ্রাপ্ত হইলেও জেষ্ঠ্যতার বিধিলঙ্ঘন করে গ্রেডেশন লিষ্ট ছাড়ায় আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে উচ্চমান সহকারি, হেড এ্যাসিস্টেন্ট ও সর্বশেষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা (চ:দা:) পদে বিধি লঙ্ঘন করে বর্তমান আশীন অবস্থায় কর্মরত আছেন। তিনি ২০১৭ইং সাল হইতে হাসপাতালে নিয়োগ বাণিজ্য, পদোন্নতি/পদায়ন সংক্রান্ত কাজে আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে অর্থ গ্রহণ এবং বিভিন্ন কেনাকাটায় অনিয়ম কম্পিউটার মেরামত ও হাসপাতালে বিভিন্ন কম্পিউটার ক্রয় সংক্রান্ত কাজে অনিয়ম করে মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন অস্থায়ী নিয়োগে যেমন: দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগ, র‍্যাপিড স্যামপল কালেকশন নিয়োগ, আউটসোর্সিং নিয়োগে নিজেদের লোকের নামে ঠিকাদার নিয়োগ করে জনপ্রতি ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে মোটা অংকের টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করেছে। পছন্দমত ঠিকাদারকে সিডিউলের তথ্য ফাঁস করে কাজ পাইয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এই কয় বছরে নামে বেনামে অঢেল সম্পদের মালিক বনেছেন। তার অবৈধকাজে বিরুদ্ধে কোন কর্মচারী প্রতিবাদ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মুখ বন্ধ রেখেছে। ঠিকাদারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সম্পূর্ণ অনিয়ম করে ঠিকাদারদের সঙ্গে বিধিবর্হিভূতভাবে জাপান ভ্রমন করেছেন এবং স্বপরিবারে কয়েকবার ওমরাহ হজ্ব পালন করেছেন। তার সিন্ডিকেটে অন্যতম সদস্য কে ফটোকপি মেশিন চালানোর জন্য সিঁড়ির নিচে একটি ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। ইহাতে সরকারের কোন রাজস্ব জমা হয়নি। তিনি ডিউটি রোস্টারের নামে সিন্ডিকেটেরএর মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগে/স্থানে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিয়ে অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রহন ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে। একই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মচারীদের পোষাক পরিচ্ছেদ ক্রয়ে নামসর্বস্ব ঠিকাদার নিয়োগ করে নিজেরাই নিম্নমানের কাপড় ক্রয় করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়। এছাড়াও একই সিন্ডিকেটে গ্যারেজ, ডক্টরস্ ক্যাফেটেরিয়া নিজেদের পছন্দমত কর্মচারীকে দায়িত্ব দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন। তিনি পছন্দের ব্যক্তিবর্গকে পদোন্নতি পাইতে সহযোগীতা করে যোগ্য বয়জেষ্ঠ্যদের বাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে বিধিবর্হিভূতভাবে ওয়ার্ডবয় থেকে অফিস সহকারি ও ক্যাশ সরকার পদে পদোন্নতি পাইয়ে দিতে সহযোগীতা করেছেন। তার ইশারা/অর্থ ছাড়া কোন কর্মচারী কোন প্রাপ্য অধিকার আদায় সম্ভব নয়। এছাড়াও ঢাকা ও বগুড়া গনপূর্ত এবং সরকারি কাঠের কারখানা বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের সাথে লিয়াজু করে উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়মের সহায়তার মাধ্যমে বড় অংকের অর্থ আদায় করে বিএমএর সভাপতি ডা: মোস্তফা আলম নান্নুকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে নানাবিধ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আওয়ামীলীগের দোসর, স্বেচ্ছাচারী, স্বার্থবাদী ও ষড়যন্ত্রকারী ও একজন বদমেজাজী অসত কর্মচারী। সে টাকা ইনকামের নেশায় সরকারি স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অফিসে দামি দামি অটোবির ফার্নিচার তুলে নিয়ে নিলাম ছাড়ায় বিক্রি করে টাকা পকেটস্থ করেছে বিনিময়ে নামমাত্র বোর্ডের ফার্নিচার সরবরাহ করে আবারও টাকা ইনকাম করেছে। সে আওয়ামীগের ছত্রছায়ায় অনেক স্টাফ কে বদলি করে আবার অত্র প্রতিষ্ঠানে পদায়ন করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে। তার দাপট ও ব্যবহারে হাসপাতালে সকল স্তরে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এতে করে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে সে বিএনপির নেতাদের ম্যানেজ করেবহাল তবিয়তে অত্র প্রতিষ্ঠানে নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য যে, তিনি ক্ষমতার দাপটে বর্তমান প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে চলতি দায়িত্ব পালন করছেন এবং পদায়িত প্রধান সহকারি কে সকল দায়-দায়িত্ব হস্তান্তর না করিয়া সরকারি বিধিবর্হিভূতভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও প্রধান সহকারির দায়িত্ব নিজ আয়ত্বে কুক্ষিগত করে রেখেছে এ বিষয়ে পরিচালক মহোদয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে প্রধান সহকারির নিকট সকল ফাইলপত্র বুঝিয়া দেওয়ার মৌখিক নির্দেশ প্রদান করিলেও অদ্যবদি হস্তান্তর করেনি। তার আচরন ও ক্ষমতার অপব্যবহারে অফিসের অন্যান্য কর্মচারীসহ রোগীরা প্রতিনিয়ত বৈষমের স্বীকার হচ্ছে। তিনি পরিচালক, উপ-পরিচালক, বিএমএ, সাচিবসহ ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নেতাদের ম্যানেজ করে যে, সিন্ডিকেট গড়ে টাকার পাহাড় গড়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- ১। বগুড়া সদরের ঠনঠনিয়া এলাকায় একক নামে ৫ম তলা ফাউন্ডেশনের ৪র্থ তলা কমপ্লিট অত্যাধুনিক বিল্ডিং। ২। বগুড়া সদরের জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকায় (কালী মন্দিরের পার্শ্বে) ৭ম তলা বিশিষ্ট যৌথভাবে মুসকান টাওয়ার।
৩। বগুড়া সদরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় নূর মসজিদের পার্শ্বে ৭ম তলা বিশিষ্ট যৌথভাবে গ্রীনভিলা টাওয়ার।
৪। বগুড়া সদরের মালগ্রাম এলাকায় সাত শতকের একক প্লট। ৫। বগুড়া জেলার নন্দীগ্রামে ভায়রা ভাইয়ের এলাকায় ১০-১৫ বিঘা ধানী জমি ক্রয়। ৬। বগুড়া জেলার আদমদীঘি এলাকায় বিশাল সাইকেল শো-রুম। এছাড়াও বাসাগৃহে দামী দামী এসি, ফ্রিজ, বিদেশী টাইলস্, ওয়াশিং মেশিন, গ্রিজার, ওভেন, হাতিল ফার্নিচার এবং সকল বাড়ী ইন্টেরিয়র ডিজাইন সমৃদ্ধ। পরিবারের অন্যান্য সদস্য এর নামে বেনামে এফ.ডি.আর স্বর্ণালংকারসহ না জানা সম্পদের পাহাড় গড়েছে। আরও উল্লেখ্য যে, আমার বিরুদ্ধে মামলা চলাকালীন সময়ে আমার চাকুরির যেন কোন ক্ষতি না হয় এই আশ্বাসে কয়েকদফায় মোট ৩,৮০,০০০/- (তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকা গ্রহন করেছে। তার স্বাক্ষী আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য সহ অনেকে আছেন। বর্তমানে আমার চাকুরি হইতে বরখাস্তাদেশ কোর্টের রায় পাওয়া সত্বেও তিনি আমার যোগদানের বাধা সৃষ্টি করছেন। তিনি আমার নিকট আরও টাকা দাবি করছেন যা আমার প্রদান করা সম্ভব নয়। আমি গরীব অসহায় একজন নগণ্য কর্মচারী এবং আমার স্বামী একজন প্যারালাইজড রুগী। বর্তমানে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে অসহায় দিন যাপন করছি। এমতাবস্থায় আমার চাকুরি পুর্ন বহাল করন সহ দূর্নীতিবাজ, বদমেজাজী ও চরিত্রহীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: তোফাজ্জল হোসেন, পিতা: মো: আফরেদ আলী, আদমদীঘি, বগুড়া এর অপসারন সহ বিচার দাবী করছি। সেই সাথে তার সিন্ডিকেটের সকল দূর্নীতিবাজদের অপসারন দাবি করছি। এই বিষয়ে প্রায় ২০০ কর্মচারীর স্বাক্ষর সহ দুদকে অভিযোগ দায়ের করা হলেও অদ্যবধি পরিচালক সহ কোন সংস্থা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। তোফাজ্জলের সিন্ডিকেট হাসপাতালের রাস্তার পূর্ব পার্শ্বে হেলথ প্লাস ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার খুলে দালালের মাধ্যমে হাসপাতালে আগত গরীব নীরহ রোগীদের ভেগে নিয়ে সর্বশান্ত করে অবৈধ ইনকাম করছেন। ইহাতে কর্তৃপক্ষ দালাল নিধনে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।

এই বিভাগের আরও খবর

Back to top button