কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অভিযানে লামা-আলীকদম সড়কে ডাকাতির মূলহোতা তৈয়ব সহ ৪ জন অস্ত্রসহ গ্রেফতার।
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
র্যাব-১৫ এর অভিযানে বান্দরবান জেলার ফাঁসিয়াখালী লামা আলীকদম কক্সবাজার হাইওয়ে মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনায় মূলহোতা তৈয়ব সহ ৪জন ডাকাত অস্ত্রসহ গ্রেফতার। ০৩টি ডাকাতিকৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার।
সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে অপহরণ, ডাকাতি, চুরি এবং ছিনতাই এর বেশ কয়েকটি ঘটনা সংঘটিত হয়। ফলে র্যাব-১৫, কক্সবাজার ডাকাতির ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত চক্র গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী বৃদ্ধি করে। র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং স্থানীয় লোকজনের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব একটি চক্র টি কে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
গত ২৯-জুলাই-২০২৩ খ্রিঃ রাত অনুমান ২১.০০ ঘটিকার সময় দুর্নীতি দমনে তথ্য প্রকাশকারী সংস্থার সিনিয়র সহকারী পরিদর্শক শিল্পী জাফর আলম আজাদ মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে কক্সবাজার চকরিয়া লামা আড়াই মাইল-কুমারী ব্রিজ এলাকায় একটি অজ্ঞাত ডাকাত দল তাকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পাহাড়ী এলাকার ভিতরে বেঁধে রেখে মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশ হলে র্যাব-১৫, কক্সবাজারের আভিযানিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ জুলাই ২০২৩ খ্রিঃ অনুমান ০৫.০০ ঘটিকায় র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজারের চকরিয়া থানান ফাঁসিয়াখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পূর্বে থেকে র্যাবের নজরদারীতে থাকা ডাকাতি চক্রটির মূলহোতা তৈয়ব’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত তৈয়ব তার নেতৃত্বে গঠিত ডাকাত দলের চক্রটির ৮-১০ জনের নাম প্রকাশ করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের আভিযানিক দল ফাঁসিয়াখালী এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হাবিব, মিজান ও মোবারক নামে আরও ০৩ জন ডাকাত’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত হলেন ১। তৈয়ব (২২), পিতা-মোঃ নবী হোসেন, সাং-ফাসিয়াখালী, ২। হাবিবুর রহমান @ হাবিব (২৫), পিতা-মোঃ জাকারিয়া @ জকরিয়া, সাং-চিরিংগা, ৩। মিজানুর রহমান (২০), পিতা-মোঃ আমিন, সাং-পশ্চিম পানখালী এবং ৪। মোবারক হোসেন (২৬), পিতা-মৃত ফেরদৌস আহমদ, সাং-পশ্চিম পানখালী, সর্বথানা-চকরিয়া ও জেলা-কক্সবাজার বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত চক্রটিকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ২৯-জুলাই-২০২৩ তারিখে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতিকৃত মোটরসাইকেলটি তৌহিদুল ইসলাম (২২), পিতা-মোঃ হুসাইন, সাং-দক্ষিণ ঘুনিয়া, ফাসিয়াখালী, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার এর বসত বাড়িতে আছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৌহিদুল ইসলাম (২২) এর বসত বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে রান্নাঘরের ভিতর হতে উক্ত মোটরসাইকেলটিসহ মোট ০৩টি মোটরসাইকেল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে র্যাবের আভিযানিক কার্যক্রম চলমান থাকে। গ্রেফতারকৃত চক্রটিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র তারা কক্সবাজারের চকরিয়া থানাধীন ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া গ্রামের করুল্লিয়াশিয়া রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বের ঝোপের ভিতর মাটির নিচে পুঁতে রেখেছে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রটিকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ জুলাই ২০২৩ খ্রিঃ অনুমান ০৪.৩৫ ঘটিকায় উক্ত স্থানে র্যাবেের আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে তাদের দেয়া ভাষ্য ও দেখানো মতে মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থা হতে সর্বমোট ০৪টি দেশীয় এলজি, ০২টি দেশীয় রামদা ও ০৫ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত চক্রটিকে অন্যান্য ডাকাতির ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ৩০ মে ২০২৩ খ্রিঃ রাত অনুমান ০০.৩৫ ঘটিকার সময় ডাকাত চক্রটি কক্সবাজারের চকরিয়ার গ্যাস, জ্বালানী তৈল, গ্যাস চুল্লি ব্যবসায়ী মোঃ এমরানুল হককে চকরিয়া পৌরসভাধীন ৩নং ওয়ার্ডের বাটাখালি আবু তাহের মেম্বারের বাড়ির সামনে অতর্কিত হামলা করে এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে নগদ ১,২৪,৩০০/- (এক লক্ষ চব্বিশ হাজার তিনশত টাকা) ও মোবাইল ফোন জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়াও চকরিয়ায় সংঘঠিত বেশকিছু ডাকাতির ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রটির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।