প্রায় এক মাস ধরে অনেকটাই ধারাবাহিকভাবে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমছে ডিমের দাম। রোজার আগের সপ্তাহের তুলনায় এখন ডজন প্রতি ডিমের দাম কমেছে ১৫ টাকা করে। আর খুচরা দোকানে প্রতি পিস ডিমের দাম এক মাসের ব্যবধানে কমেছে ২ টাকা করে।
এদিকে ডিমের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে রোজার আগের সপ্তাহের তুলনায় বর্তমানে ছোলার দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা করে কমেছে। রোজার শুরুতে ৭৫-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ছোলা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা প্রতি ডজন ডিম ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। আর এক ডজনের কম নিলে প্রতিহালির দাম নিচ্ছেন ২৫ টাকা। অপরদিকে মুদিদোকানে প্রতিপিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭ টাকা করে।
অথচ রোজা শুরুর আগের সপ্তাহেও ব্যবসায়ীরা ডজন হিসেবে ডিম বিক্রি করেছেন ৭৫-৮০ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে মুদিদোকানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হয় ৯ টাকা। সে হিসাবে খুচরা পর্যায়ে একমাসের ব্যবধানে পিস প্রতি ডিমের দাম কমেছে ২ টাকা।
ডিমের দাম এমন কমার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রোজার কারণে মানুষ এখন ডিম কম খাচ্ছে। যে কারণে ডিমের চাহিদা অন্য সময়ের তুলনায় বেশ কম। আর চাহিদা কম হওয়ায় দামও কমেছে।
ছোলার দাম কমার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি টিসিবি ছোলার দাম কমিয়ে দিয়েছে। যার প্রভাব বাজারেও পড়েছে। তাছাড়া আগের মতো এখন ক্রেতারা ছোলা একবারে অনেক পরিমাণে কিনছেন না। বেশিরভাগ ক্রেতাই আধাকেজি-এককেজি করে কিনছেন। ফলে রোজার সময় হঠাৎ করে ছোলার যে চাহিদা বেড়ে যায় এবার তা বাড়েনি। এর প্রভাবও দামের ক্ষেত্রে পড়েছে।
হাজীপাড়ার ডিম ব্যবসায়ী সালাম বলেন, রোজা শুরু হওয়ার আগে এক ডজন ডিম বিক্রি করেছি ৮০ টাকা। এখন সেই ডিম বিক্রি করছি ৬৫ টাকা। রোজার কারণে এখন মানুষ ডিম খাওয়া কমিয়ে দেয়ায় চাহিদা কমেছে। কিন্তু খামারে তো ডিমের উৎপাদন কমেনি। ফলে চাহিদার তুলনায় বাজারে ডিমের সরবরাহ বেশি। এ কারণেই দাম কমে যাচ্ছে।
মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী মজিবর বলেন, রোজার শুরুতে ডিমের ডজন ছিল ৮৫ টাকা। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকায়। আর এক সপ্তাহ আগে ডজন ছিল ৭৫ টাকা।
দাম কমার কারণ হিসেবে এই ব্যবসায়ীও বলেন, যারা রোজা রাখেন তারা এখন ডিম খুব একটা খাচ্ছেন না। অনেকের ধারণা ডিম গরম খবার। ডিম খেয়ে রোজা রাখলে হয় তো সমস্যা হতে পারে।
রামপুরার মুদিদোকানি শামছু জানান, রোজা শুরু হওয়ার আগে একপিস ডিম ৯ টাকায় বিক্রি করেছি। আর হালি বিক্রি করেছি ৩৫ টাকা। কিন্তু রোজা শুরু হওয়ার পর ডিমের দাম কয়েক দফা কমেছে। এখন একপিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭ টাকায় এবং হালি বিক্রি করছি ২৫ টাকা। সে হিসাবে হালিতে ডিমের দাম কমেছে ১০ টাকা এবং পিসে কমেছে ২ টাকা করে।
ছোলার দামের বিষয়ে মালিবাগের ব্যবসায়ী মো. কামাল বলেন, রোজার শুরুতে ৮০ টাকা কেজি ছোলা বিক্রি করেছি। এখন বিক্রি করছি ৭০ টাকা কেজি। খোলাবাজারে টিসিবি দাম কমিয়ে দেয়ার কারণেই এখন সব বাজারে ছোলার দাম কমে গেছে।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর ধরে ব্যবসা করছি। রোজা শুরু পর ছোলার দাম সাধারণত কমতে দেখিনি। কিন্তু এবার অর্ধেক রোজা যাওয়ার আগেই ছোলার দাম কমে গেছে। আগে যেমন মানুষ এক সঙ্গে ৪-৫ কেজি করে ছোলা কিনতো এখন তেমন দেখছি না। অধিকাংশ ক্রেতাই এককেজি-আধাকেজি ছোলা কিনছে। এতেই বোঝা যায় ছোলার চাহিদা কমেছে। আর চাহিদা কমলে দাম তো কিছুটা কমবেই।
সম্পাদক ও প্রকাশক এসএম পারভেজ
মোবাইল: +8801716159137
Mail: [email protected]