ব্রহ্মপুত্র নদে চীন বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করছে এমন খবরে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ। চীনের বাঁধ নির্মাণ প্রসঙ্গে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় পানির গতিমুখ পরিবর্তন এবং ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার যৌথ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। খবর টাইমস নাউ নিউজ।
চীনের বাঁধ নির্মাণ চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এক প্রশ্নের জবাবে মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় পানির গতিমুখ পরিবর্তনের বিষয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে সমাধান পেতে বাংলাদেশ যৌথ অববাহিকাভিত্তিক নদী ব্যবস্থাপনার ধারণাকে কাজে লাগাতে চায়। এর মাধ্যমে নদীর কোন উৎস থেকে পানিপ্রবাহ শুরু হয়েছে আর সাগরের কোন স্থানে গিয়ে তা মিলছে সেসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করতে পারব।
তিনি বলেন, প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত থাকা নদীগুলোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পানি প্রবাহের উৎস নিয়ে আলোচনা করতে চায়। একই সঙ্গে সব আঞ্চলিক সংস্থাকে এ বিষয়ে পুরোপুরি সহায়তা করতে পারলে আমরা খুব খুশি হব। নয়া দিল্লিতে ইন্ডিয়ান উইমেন প্রেস কর্পস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মোয়াজ্জেম আলী বলেন, গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্র নদে অববাহিকাভিত্তিক যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ।
ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তিস্থল হচ্ছে চীনের তিব্বতে। সেখানে এই নদ ইয়ারলুং জ্যাংবো নামে পরিচিত। প্রধান এই নদটি গঙ্গায় মিলিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং বঙ্গোপসাগরে গিয়ে শেষ হয়েছে।
বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি পরিস্কার করতে মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক কেবলই বাণিজ্যক ও ব্যবসায়িক। তিনি বলেন, চীন আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রস্তাব দিয়েছে। আমরাও কিছু প্রকল্পে তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। এখানে তুলনামূলক সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শুধুমাত্র সেসব সহায়তাই নিয়েছে যেখানে তাদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ব্যবসায়িক। কিন্তু ভারতের সঙ্গে আমাদের যে ধরনের প্রকল্প রয়েছে চীনের সঙ্গে তেমনটা নেই। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্র আছে যেখানে চীনের সুবিধা বেশি। উদাহরণ হিসেবে তিনি অনেক সময় ধরে ঋণ পরিশোধের প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঋণের ফাঁদে পড়তে চাই না। বিশ্বব্যাংক, চীন কিংবা ভারত এমনকি কোনো দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশ এমন পরিস্থিতিতে পরেনি। বিশেষ করে আমি ১৯৭১ সালের কথা ভুলে যাইনি।’
তিস্তা পানি বন্টন চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে চুক্তি হলে আমরা যথেষ্ঠ খুশি হব। বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই যদি এই চুক্তি অনুষ্ঠিত হয় তবে এর মতো খুশির খবর আর কিছুই হবে না।’
সম্পাদক ও প্রকাশক এসএম পারভেজ
মোবাইল: +8801716159137
Mail: [email protected]