বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সামাদ খান (৩৬) পিতা-মৃত মজিদ খান সাং-মধুপুর, থানা-মধুখালী,জেলা-ফরিদপুর একজন হারবাল ঔষধ ব্যবসায়ী,যার রেন্ট-এ-কারের ব্যবসাও আছে, তিনি শুক্রবার ৪ আগষ্ট ২০২৩ জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকাতে সংবাদ সম্মেলন করে ফরিদপুর জেলা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ, ডিবি মোঃ রাকিবুল ইসলাম এর বিরূদ্ধে অভিযোগ করেন যে রাকিব তাকে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছেন, মিথ্যা মামলার ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, সামাদ খান এর সাথে ওসি, ডিবি রাকিবের পরিচয় ২০১৭ সালে একটি মামলার মাধ্যমে যেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন রাকিব। নারী নির্যাতনের মামলায় সামাদ খান আসামী হওয়ায় পূর্ব থেকেই তদন্তকারী কর্মকর্তা রাকিবের সাথে বিরোধ ছিল।১। সামাদ খান অবৈধ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এবং তার নামে একাধিক মামলা আছে। মাদক ব্যবসাকে আড়াল করার জন্য মুলত তিনি পুলিশ এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এটার তীব্র প্রতিবাদ জানায় ফরিদপুর জেলা পুলিশ।
ক) তার নামে মধুখালীতে ২০১৭ সালে একটি মাদকের মামলা আছে। মধুখালী থানা মামলা নং-২২, তাং-২৮/০৮/২০১৭খ্রিঃ, ধারা-১৯৯০ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এর ১৯(১) টেবিল ৯(খ)/৩(ক)/২২(গ), র্যা ব তার হেফাজত থেকে ৩১৫০(তিন হাজার একশত পঞ্চাশ) পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট, ০১(এক) বোতল ফেন্সিডিল, ০২(দুই) বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করে।
খ) তার নামে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মধুখালীতে একটি মামলা আছে। মধুখালী থানা মামলা নং-২৩, তাং-২৮/০৮/২০১৭খ্রিঃ, ধারা-১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-সি(১)। র্যা ব তার নিকট থেকে ২৩ তেইশ) বোতল যৌন উত্তেজক সিরাপ এবং ৬৯০(ছয়শত নব্বই) পিচ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট উদ্ধার করে।
২। মধুখালী থানাতে তার নামে সরকারী কর্মচারীর ছদ্মবেশে প্রতারনার আরেকটি মামলা আছে। মধুখালী থানা মামলা নং-২৪, তাং-২৮/০৮/২০১৭খ্রিঃ,ধারা-১৭০/১৭১/৪১৭/৪১৯ পেনাল কোড রুজু হয়। র্যা ব তার কাছ থেকে এক জোড়া কালো রংয়ের বুট জুতা, একটি নেভী ব্লু রংয়ের ব্যারেড ক্যাপ, যাতে পুলিশের মনোগ্রাম সংযুক্ত উদ্ধার করে। সে সরকারী কর্মচারীর ছদ্মবেশ ধারন করে প্রতারনা করতো।
৩। সামাদ খান একজন দুশ্চরিত্র ব্যক্তি। মধুখালীতে তার নামে নারী নির্যাতনের মামলা আছে। সে তার নিজের শ্যালিকাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরন করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার শ্বশুর থানায় এসে অভিযোগ দিলে পুলিশের সহায়তায় মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। মধুখালী থানায় সামাদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা হয়। মধুখালী থানার মামলা নং-১০, তাং-১২/০৭/২০১৭খ্রিঃ, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭/৩০। ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে মামলাটি করে।
৪। সামাদ খান এর একটি নোহা মাইক্রোবাস আছে, যার রেজিঃ নং-ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-১০২০। সে ঐ মাইক্রোবাস দিয়ে মাদকের ব্যবসা চালাতো। গত ১৯/০৭/২০২৩ তারিখে ঐ মাইক্রোবাসে মাদক ব্যবসায়ীদের (মাইক্রোবাসের মধ্যে থাকা আসামী ১। মোঃ আলী আকবর ফকির(৫০) পিতা-মৃত পাচু ফকির সাং-বনমালিদিয়া, থানা-মধুখালী জেলা-ফরিদপুর, ২। জসিম উদ্দিন(৩৮) পিতা-মোহাম্মদ হোসেন, সাং-ডিলপাড়া থানা-উখিয়া, ৩। মোঃ ফারুক(৩২) পিতা-নুরুল হক সাং-বদ্যগুনা, ৪। মোঃ খোকন তারেক(২০) পিতা-মোঃ সেলিম, সাং-খসরুকুল দক্ষিণ মামুনপাড়া, উভয় থানা-কক্সবাজার সদর, সর্ব জেলা-কক্সবাজার, ৫। মোঃ ইমরুল কাজী(৩৭) পিতা-মোঃ সেন্টু কাজী, সাং-অজ্ঞাত, থানা-নগরকান্দা, ৬। সুশান্ত(৩৫) পিতা-অজ্ঞাত, সাং-অজ্ঞাত, থানা-মধুখালী উভয় জেলা-ফরিদপুর ) হেফাজত থেকে ৩৬০০(তিন হাজার ছয়শত) পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। উক্ত ঘটনায় ফরিদপুর কোতয়ালী থানার মামলা নং-৬৪, তাং-২০/০৭/২০২৩খ্রিঃ, ধারা-মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৩৬(১) সারণির ১০(খ)/৩৮/৪০ রুজু হয়। তাদের প্রত্যেকের নামেই একাধিক মাদক মামলা আছে। এর মধ্যে ১ নং আসামী আলী আকবরের নামে ১৩টা মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। একটি মাদক মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা ছিল। আরো কিছু মামলায় খালাস পাওয়ায় সিডিএমএস এ অন্তর্ভুক্ত হয়নি।৫ নং আসামী খোকন তারেকের ডিএমপি খিলখেত থানায় ১টা মাদক মামলা আছে। তারা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থেকে মাদক নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক সরবরাহ করে থাকে।
৫ প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরো জানা যায় যে, সামাদ খান মুলত অন্যের মাইক্রোবাসের ড্রাইভার ছিলেন।থানার বিভিন্ন সরকারী প্রয়োজনে যখন রিকুইজিশিনে মাইক্রোবাসটি নেয়া হতো তখন ড্রাইভার হিসেবে সামাদ এর থানা পুলিশের সাথে পরিচয় ছিল। সে পরিচয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে পুলিশের আড়ালে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে থাকতো। ওই সময় সীমান্ত এলাকা থেকে প্রচুর পরিমানে মধুখালীতে ফেন্সিডিল আসতো। সে ফেন্সিডিলগুলো বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতো। এর মধ্যে ইয়াবা আসায় সে ইয়াবার ব্যবসার সাথে ও সরাসরি জড়িয়ে পড়ে।
৬ ঔষধের আড়ালে অবৈধ ট্যাবলেট বিক্রি করে মাদকের গডফাদার হিসেবে পরিচিতি পায়। মধুখালীতে সে একটি হারবাল ঔষধের দোকান দেয়, যেখানে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন অবৈধ ঔষধ রাখতো বলে জানা যায়। উক্ত ঔষধের দোকানের আড়ালে ফেন্সিডিল ও ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যায়। এভাবে সে ধীরে ধীরে মাদকের গডফাদার হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করে এবং প্রচুর টাকার মালিক হয়।
৭ সে এভাবে হোয়াইট কলার ক্রিমিনাল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। সব ধরনের অবৈধ ব্যবসা করে সে প্রচুর টাকা পয়সা উপার্জন করে এবং সমাজের সব মহলের সাথে যোগাযোগ মেইনটেইন করে চলে। তার বিরূদ্ধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নিতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করে ও প্রেস ব্রিফিং করে নিজের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করে থাকে।
সম্পাদক ও প্রকাশক এসএম পারভেজ
মোবাইল: +8801716159137
Mail: [email protected]