মোঃ নাজমুল হুদা লামাঃ
লামায় প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের নাম ভাঙ্গিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করার একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। বুধবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সরই ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে চাঁদাদাবির ওই অডিও নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় লামায়। প্রশাসেনর নাম ভাঙ্গিয়ে সরই ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস কোম্পানীর নিকট ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে স্থানীয় বিএনপি সদস্য ফিরোজ (৪৫)। ডিসেম্বর মাসের ১৯ তারিখে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়ন পরিষদ কক্ষে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সরই ইউপি বিএনপির সভাপতি আঃ হালিম (সাবেক মেম্বার) এর নেতৃত্বে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। দেড় মাসেও সেই তালা খুলেনি কোনো মহল। তালা খুলতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় বিএনপির নেতাদের ম্যানেজ করতে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস জানিয়েছেন। সরই ইউপি চেয়ারম্যান এর নিকট ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করার এমন একটি অডিও রেকর্ডটি গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ:দা) রুপায়ন দেব এর হোয়াটসঅ্যাপে আসলে, তিনি বিষয়টি জেলা প্রসাসককে জানিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, সরই ইউনিয়ন উন্নয়ন সমন্বয় ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং চলাকালে গত ১৯ ডিসেম্বর’২৪ সরই ইউনিয়ন বিএনপির (একাংশ) সভাপতি ও সাবেক মেম্বার আব্দুল হালিম স্থানীয় বিএনপির সদস্য নাছির উদ্দিন, নুরুল আবছারসহ ২০/২৫ জন নেতাকর্মী নিয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা লাগানোর কিছুদিন পর বিএনপির এ সকল নেতাকর্মীরা স্থানীয় জনগণের ব্যানারে চেয়ারম্যান ইদ্রিস কোম্পানির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। । চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা লাগানোর পর থেকে স্থানীয় সেবা প্রার্থী জনসাধারণ চরম দূর্ভোগে পরেন। চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে ভোটার তালিকায় অন্তভূক্তি হতে ইচ্ছুক জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সংগ্রহে ৮ কিলোমিটার দূরে লোহাগাড়া লাকুড়িপাড়ায় গিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে আনতে হয়। এর ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, সরই এলাকার বিএনপির সদস্য এবং আব্দুল হালিম মেম্বারের একান্ত আস্থাভাজন টঙ্গঝিরি এলাকার বাসিন্দা মোঃ ফিরোজ ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে তার কাছ থেকে। বিএনপি সদস্য ফিরোজ চাঁদা দাবি কালীন সময়ে বলেছেন ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে চেয়ারম্যানের কক্ষে লাগানো তালা খুলতে হবে। এদেরকে ম্যানেজ করা ছাড়া তালা খোলা যাবে না। ৩০ জানুয়ারি সাংবাদিকদের কাছে চাঁদা দাবির কথা স্বীকার করেছে বিএনপি সদস্য ফিরোজ। সে আরো বলেন, গত মঙ্গল বার ব্যাক্তিগত লেনদেনের একটি শালিসি ডকুমেন্টস নিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে যায়। ওই সময় চেয়ারম্যান ইদ্রিছ কৌশলে কথার পীঠে কথা বলিয়ে তা রেকর্ড করেন। তবে বিষয়টি যে এত বড় হবে তার জানা ছিল না। চাঁদা দাবির অডিওটি সংদদাতা হাতে রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অঃদাঃ) রুপায়ন দেব জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা দাবির একটি অডিও তার হস্তগত হয়েছে। তিনি জানান বিষয়টি জেলা প্রশাসক বান্দরবানকে জানিয়েছেন। নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আগামী সপ্তাহে লামায় যোগাদান করবেন। এই চাঁদা দাবির বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সরই ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা লাগানোসহ অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক এসএম পারভেজ
ফ: +8801716159137
Mail: [email protected]