রফিকুল ইসলাম কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদ দাতাঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলাধীন ১ নং রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। খোদ ১ নং রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আসলাম নিজে বাদী হয়ে জেলা প্রশাসক সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে রানীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ দাখিল করে বিচার চেয়েছেন। ইউপি সদস্য মোঃ আসলাম এর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তায় কর্মসূচির আওতায় ২০২২ -২০২৩ অর্থবছরে ফকিরের হাট বাজার শফিকুলের দোকান থেকে ফকিরেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত এবং বাচ্চু মেম্বারের বাড়ির সামনে থেকে রাঙ্গার দোকান পর্যন্ত রাস্তাটি ৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আরসিসি করা হয়। কিন্তু উক্ত রাস্তায় পূর্ব থেকে হেরিং বন্ড ছিল। সেই ইট দিয়ে উক্ত রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ করা হয় এবং আরো অনেক ইট বাড়তি থাকাতে চেয়ারম্যান মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু উক্ত ইট দিয়ে ফকিরের হাট বাজারের পাশে একটি বক্স কালভার্ট এর কাজ করেন। যার বরাদ্দ ছিল ২ লক্ষ টাকা ত্রাণ অফিসের নন-ওয়েজ প্রকল্প। উদ্বৃত্ত আরো অনেক ইট ও খোয়া যা তিনি নিজে বিক্রি করেছেন । ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে টি আর কর্মসূচির আওতায় রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের মোটরসাইকেল গ্যারেজ ঘর মেরামত করণ প্রকল্প বাবদ ৮০ হাজার টাকা সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মোসাম্মদ বেদনা বেগমের নামে দেওয়া হলেও চেয়ারম্যান মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু ফুসলিয়ে উক্ত মহিলা ইউপি সদস্যের নিকট থেকে প্রকল্পটি কিনে নিয়ে কোন কাজ না করে প্রকল্পের পুরো টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে টি আর কর্মসূচির আওতায় ১ লক্ষ টাকা ব্যয় রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের আসবাবপত্র সরবরাহ প্রকল্প কাগজে কলমে দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে আসবাবপত্র সরবরাহ না করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় ৭ নং ওয়ার্ডের দরিদ্র পরিবারের মধ্যে নলকূপ স্থাপন করার কথা থাকলেও মূলত ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু তার স্বেচ্ছাচারিতায় প্রকল্পের নীতিমালা অমান্য করে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নলকূপ স্থাপন করেন। ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় ৩ নং ওয়ার্ড এর বিভিন্ন জায়গা সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের ওয়ার্ড কমিটি আহ্বায়ক মোঃ আসলাম হওয়া সত্বেও কোথাও তার কোন স্বাক্ষর বা তার কোন মতামত না নিয়েই সরকারের গৃহীত প্রকল্পের বাস্তবায়ন নীতিমালা সম্পূর্ণরূপে অমান্য করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইউপি চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারিতামূলকভাবে সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করেছেন। উল্লেখ্য সম্প্রতি একটি মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু বেশ কয়েকদিন কারাবাসের পর অন্তবর্তী কালীন জামিন লাভ করেন। চিলমারী কোর্ট পুলিশ এস আই রানা মিয়া মামলার এজাহারের বরাতে ললেন, গত ৩০ আগস্ট রাণিগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরের বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে সাংগঠনিক বৈঠকে বসেন বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় রাণিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও নয় নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, এক নম্বর ওয়ার্ড আ' লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিন, দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু মিয়াসহ একদল সন্ত্রাসী দেশী অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। এতে বিএনপি কর্মী মোনারুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, লুৎফর রহমান,কপিল উদ্দিনসহ ছয় জন আহত হন। হামলায় মোনারুল ইসলাম গুরুত্বর আহত হলে তার মাথায় আটটি সেলাই দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর রাণিগঞ্জ ইউনিয়নের যুবদলের সভাপতি ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসলাম মিয়া বাদী হয়ে ১১জনকে আসামি করে চিলমারী থানায় মামলা করেন।
মামলার বাদী আসলাম মিয়া জানান, হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর রাণিগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপিতে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে আমরা বৈঠকের আয়োজন করি। তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে দেশি অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মী আমাকে রক্ষা করতে গেলে আহত হয়। এজন্য আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই।
সম্পাদক ও প্রকাশক এসএম পারভেজ
মোবাইল: +8801716159137
Mail: [email protected]